শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: স্কুলে (school) নীল-সাদা পোশাক-বিতর্ক। এনিয়ে স্কুল পড়ুয়াদের (student) বিক্ষোভ (agitation)। তার জেরে, কোচবিহারের (coochbehar) সবকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে (head master) চিঠি দিল স্কুল শিক্ষা দফতর (school education department)। নির্দেশ, স্কুল চলার সময় স্কুলের ইউনিফর্ম পরে, পড়ুয়ারা কোনও সরকারি দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে পারবে না।


বিক্ষোভের খুঁটিনাটি:
কারও ইউনিফর্ম সবুজ-সাদা, কারও আবার খয়েরি-সাদা। কার ক্ষেত্রে ইউনিফর্মে রয়েছে সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট। ক্লাস শুরু বা ছুটির পথে বাচ্চাদের রঙিন পোশাকই বলে দেয় কে কোন স্কুলে পড়ে।শুধু তাই নয়, ইউনিফর্মের রংই প্রত্যেকটি স্কুলের ঐতিহ্য বহন করে। কিন্তু সম্প্রতি সমস্ত সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের পোশাক নীল-সাদা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। যাতে থাকবে বিশ্ব বাংলা লোগো। এরই প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে, কোচবিহার জেলা জুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্কুল। কোথাও এক শিক্ষক কবিতা পাঠ করছেন, 'সবুজ সাদা মোদের প্রাণ, স্কুলের পোশাক আমার মান। আমাদের রং সবুজ সাদা, রঙের বদল মানব না। আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে কাউকে দেব না।' বিক্ষোভে সামিল হয়েছে প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো সুনীতি অ্যাকাডেমির মতো স্কুল, একশো ছুঁইছুঁই মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ হাই স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়ারা। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। গত কয়েক দিনের এই বিক্ষোভের জেরে 
কোচবিহারের সবকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে চিঠি দিল স্কুল শিক্ষা দফতর। তাতে নির্দেশ, স্কুল চলার সময়, স্কুলের ইউনিফর্ম পড়ে পড়ুয়ারা কোনও সরকারি দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে পারবে না।


কী বলা রয়েছে নির্দেশে?
নির্দেশে লেখা, বিক্ষোভের জেরে পঠনপাঠন বন্ধ হলে দায় নিতে হবে শিক্ষকদের। পাশাপাশি, এতে ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের অনুমতি রয়েছে কিনা, সেটিও দেখতে হবে। আর স্কুল শিক্ষা দফতরের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব বাম ও বিজেপিপন্থী শিক্ষক সংগঠনগুলো। কোচবিহার এবিটিএ-র সদস্য ও সম্পাদক সুজিত রায়ের যেমন বক্তব্য, 'দমন করার জন্য স্কুল শিক্ষকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এটি। স্বৈরাচারী মনোভাব। প্রাক্তন ছাত্ররা যেখানে আন্দোলন করছে, সেখানে শিক্ষকদের কেন কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে?' বিজেপি শিক্ষক সেলের সদস্য দেবানিক ভট্টাচার্যের আবার সমালোচনা, 'বর্তমান রাজ্য সরকার স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে আচরণ করছে। স্কুলগুলো নিজস্ব অধিকার বজায় রাখতে পারছে না। পোশাকটা ওদের পরিচিতি। ছাত্রছাত্রীদের ভাবাবেগের বিষয়। তা নিয়ে ছেলেখেলা। জোর করে নীল সাদা পোশাক চাপানো হচ্ছে।' পাল্টা ব্যাখ্যা এসেছে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের তরফেও। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিঠুন বৈশ্যের যেমন যুক্তি, 'রাজ্য বৃহত্‍ উদ্দেশ্য নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক সাইকেল। এক ব্যাগ। তাই এক ইউনিফর্ম.. আগামীদিনে এর মর্ম বুঝবে। বক্তব্য থাকলে, আন্দোলন কেন, আবেদন করে জানাক।' সব মিলিয়ে পোশাক বিধি নিয়ে বাড়ছে উত্তেজনা। 


আরও পড়ুন:নভেম্বর পর্যন্ত ভোগাবে ডেঙ্গি প্রকোপ ? বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক স্বাস্থ্য সচিবের