কলকাতা: বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহর (Scientists Bikash Sinha Death) জীবনাবসান। আজ সকালে বেসরকারি নার্সিংহোমে জীবনাবসান হয় তাঁর। বিজ্ঞানীর মরদেহ তাঁর মিন্টো পার্কের বাসভবনে আনা হচ্ছে। গত বছরখানেক ধরে ভুগছিলেন অধ্যাপক বিকাশ সিংহ। তাঁর মৃত্যুতে বিজ্ঞানীমহলে শোকের ছায়া।
বিজ্ঞানীকে নিয়ে...
বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসের সাইট খুললে দেখা যাবে, 'ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রোন সেন্টার'-এর INSA Senior Scientist হিসেবে কাজ করেছেন এই প্রবীণ বিজ্ঞানী। মূলত 'নিউক্লিয়ার ফিজিক্স' ও 'হাই এনার্জি ফিজিক্স' ছিল তাঁর চর্চার বিষয়। সে দিক থেকে দেখলে পরমাণু সংক্রান্ত গবেষণার জন্য বার বার শিরোনামে এসেছিলেন গবেষক-অধ্যাপক। তা ছাড়া, তাঁর গবেষণার বিশেষ দিকগুলির মধ্যে ছিল 'হাই এনার্জি ফিজিক্স', 'কোয়ার্ক গ্লুয়োন প্লাজমা', 'নিউক্লিয়ার মেডিসিন প্রিকারসারি সিগনালস ফর আর্থকোয়েকস', 'হিলিয়াম ফ্রম থার্মাল স্প্রিং' এবং 'আর্লি ইউনিভার্স কসমোলজি' মতো বিষয়ও। ১৯৪৫ সালে জন্মান বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। প্রথমে পদার্থবিদ্যা নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে লেখাপড়া করেন। তার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে কেমব্রিজ যাত্রা। পরবর্তীকালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়েও যান অধ্যাপক সিংহ। বরাবর পরমাণু-বিজ্ঞান নিয়ে উৎসাহী, আদতে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ওই বিজ্ঞানী দেশ-বিদেশ থেকে বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। ২০১০ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত করা হয় বিকাশ সিংহকে। ২০২২ সালে পান রবীন্দ্র পুরস্কার। কিন্তু গত বছরখানেক ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। এদিন তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া ছড়িয়ে পড়ে বিজ্ঞানী মহলে।
সচেতনতা বিস্তার...
বৈজ্ঞানিক গবেষণা যে শুধুমাত্র পরীক্ষাগারের চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে থাকার বিষয় নয়, বরং সেটিকে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি সে কথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন এই গবেষক-অধ্যাপক। তাই গবেষণার পাশাপাশি আমজনতার মধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে অনুসন্ধিৎসা এবং সচেতনতা তৈরি করার কাজেও নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। কৃতী বঙ্গসন্তানকে সিলেবাস কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেছিল তৃণমূল সরকার। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
লেখেন, 'বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের অকালপ্রয়াণে শোকাহত। বাংলার কৃতী সন্তান হিসেবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের দুনিয়াকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি এই পরমাণু বিজ্ঞানী নিজের জীবনশৈলির মাধ্যমে আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন।...২০২২ সালে ওঁকে বঙ্গবিভূষণে সম্মানিত করতে পেরে আমরা ধন্য। তিনি যে পুরস্কার নিতে সশরীরে মঞ্চে এসেছিলেন তা আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে।'
আরও পড়ুন:'হর ঘর তিরঙ্গা' বাইক ব়্যালি দিয়ে শুরু ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন