মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: তেলের দাম বৃদ্ধি ও যাত্রীসংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (South Bengal State Transport Corporation) দুর্গাপুর ডিপো থেকে অন্ততপক্ষে ৭-৮টি বাস বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। দাবি, দুর্গাপুর (Durgapur) বাস ডিপো কর্তৃপক্ষের। বাস কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নোটিসও। সদ্য পরিবহণমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত স্নেহাশিস চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে জানান, কেন্দ্র যে হারে তেলের দাম বাড়িয়েছে, তাতে পরিবহণ জ্বালানির খরচ অনেকটাই বেড়েছে। দুর্গাপুর ডিপোয় কী হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


দুর্গাপুর ডিপো থেকে বাস বসানোর সিদ্ধান্ত: সার দিয়ে দাঁড়িয়ে একের পর এক সরকারি বাস। দীর্ঘদিন হয়ে গেছে, চাকা গড়ায়নি SBSTC’র এই বাসগুলির। হয় না রক্ষণাবেক্ষণও। এই ছবি দুর্গাপুরের SBSTC বাস ডিপোর। সরকারি বাস ডিপোর ম্যানেজার নিজে স্বীকার করছেন, রাজ্য সরকার অর্থ বরাদ্দ না করায়, বন্ধ করে দিতে হয়েছে একাধিক রুটের বাস। ফলে বিপর্যস্ত এই রুটের SBSTC বাস পরিষেবা। দুর্গাপুর SBSTC বাস ডিপোর ম্যানেজার বনমালি লক্ষণ বলেন, “রাজ্য সরকার চলতি বছরে আর্থিক বরাদ্দ মঞ্জুর করেননি, গত মার্চ মাস থেকে আর্থিক সমস্যা চলছে। সরকারের দেওয়া ফান্ড থেকে গাড়ীর যন্ত্রাংশ কেনা থেকে শুরু করে জ্বালানির খরচা, অস্থায়ী শ্রমিকদের বেতন সবটাই দিতে হয়। বাধ্য হয়ে কয়েকটি রুটে সরকারি বাস চালানো বন্ধ করতে হয়েছে। আগে ১২-১৪ কোটি বরাদ্দ হত ডিপোগুলির জন্য। এবছর একটাকাও হয়নি।’’


বাস ডিপো সূত্রে খবর, এককালে, এখান থেকে প্রতিদিন ৭৫-৮০টির মতো সরকারি বাস ছাড়ত। মালদা, বহরমপুর, বালুরঘাট, দিঘা, কৃষ্ণনগর, ধর্মতলা। সহ বিভিন্ন রুটে চলত বাস। কিন্তু, পর্যাপ্ত টাকা না থাকায়, বর্তমানে, অধিকাংশ রুটের বাস চলাচলই বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে দাবি। এর ফলে কাজ হারিয়েছেন প্রায় আড়াইশো অস্থায়ী কর্মী। দুর্গাপুর SBSTC বাস ডিপোর ট্রাফিক আধিকারিক প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “জ্বালানির দাম বেড়েছে, অথচ ভাড়া বাড়ায়নি সরকার,জ্বালানির বর্তমান বাজার দর আর বাস ভাড়ার মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক তৈরী হয়েছে আর বাধ্য হয়ে বিভিন্ন রুটে সরকারী বাসের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা খোলা ছিল না তাদের কাছে।’’


টাকার ‘অভাবে’ বন্ধ বাস? ঘটনায় তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। যদিও সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই, “এর চেয়ে আর বড় লজ্জা হতে পারেনা সরকারের,যে রাজ্যের মন্ত্রীর ঘরে কোটি কোটি টাকা মেলে সেই সরকারের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি আর কি বা আসা করা যায়, হয়তো সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীর ঘরে ইডি অভিযান করলে থাক থাক টাকা মিলবে।’’ পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য এসব হয়েছে। দায়িত্ব নিয়ে দেখব কী। কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়।


আরও পড়ুন: South 24 Parganas: নাবালিকা বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার নরেন্দ্রপুরে, গ্রেফতার ৪