উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, আশাবুল হোসেন ও দীপক ঘোষ, কলকাতা: মঙ্গলবার ভিড়ের চাপে, বদলে গেল SFI-DYFI’এর সমাবেশের জায়গা। ওয়াই চ্যানেল থেকে সভামঞ্চ সরল ধর্মতলার (Dharmatala) মোড়ে। তৃণমূলের (TMC) একুশে জুলাইয়ের সভাস্থলের অদূরে সভা করল বাম (CPIM) ছাত্র-যুবরা। এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি (BJP)। যাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। আর ধর্মতলার মোড়ে সভা নিয়ে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে সিপিএম-কংগ্রেস (Congress)।
এক নজরে বাম-সমাবেশ
কর্মী-সমর্থকের ভিড়। তার মধ্যেই কোথাও জ্বলজ্বল করছে লাল পতাকা। কোথাও নিহত ছাত্র নেতা আনিস খানের ছবি। বামেদের ছাত্র-যুব সংগঠনের ডাকা সমাবেশে, এভাবেই ভিড়ে ভাসল ধর্মতলা। আর ভিড়ের চাপে বদলে গেল সভাস্থলও। ওয়াই চ্যানেলের বদলে সভা হল ধর্মতলার মোড়ে। যা নিয়ে বাধল রাজনৈতিক বাগযুদ্ধও। প্রায় দু’সপ্তাহের টানাপোড়েনের পর, SFI-DYFI’কে ওয়াই চ্যানেলে সভা করতে দিতে রাজি হয়েছিল পুলিশ। মঙ্গলবার সেখানেই জমায়েত করেন বাম ছাত্র-যুবরা। কিন্তু, কিছুক্ষণের মধ্যে, ভিড় উপচে পড়লে, সভাস্থল ওয়াই চ্যানেল থেকে ধর্মতলা মোড়ের দিকে সরানোর কথা ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন, "আমাকে হয়ত পরে মেরে ফেলতে পারেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না", এবিপি আনন্দে বিস্ফোরক বিচারপতি
এদিন DYFI এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, "ইনসাফের সভা, মানুষ চাইছে। আমরা কী করব? জায়গা হল না, ওনারা জায়গা দিতে পারলেন না। মানুষ নিজের রাস্তা নিজে তৈরি করে নেয়। কোনও পুলিশ, কোনও সরকার, কোনও মমতা ব্যানার্জি আটকাতে পারবে না। জায়গা নেই তো। আমাকে তো মাইকে বলতে হবে। আমার তো জায়গা নেই। আমি ওখানে ভাষণ দেব। এমনিতেও লোক দাঁড়িয়ে আছে। আমি এখানে ভাষণ না দিয়ে, ওখানে দেব।"
নেতৃত্বের ডাকে সাড়া দিয়ে, বিশাল জমায়েত ধর্মতলার মোড়ের দিকে হাঁটতে শুরু করে। অস্থায়ী মঞ্চে শুরু হয় সমাবেশ। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমরা বলেছিলাম ধর্মতলা চলো। মানুষ চেয়েছে, তাই হয়েছে।" মঙ্গলবার SFI-DYFI যেখানে সমাবেশ করে, তার অদূরে, ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে, প্রতি বছর একুশে জুলাই সমাবেশ করে তৃণমূল।
বাগযুদ্ধে শাসক-বিরোধী
প্রসঙ্গত, এখানে অমিত শাহর সভা করার জন্য প্রশাসনের অনুমতি না পেয়ে, বিজেপিকে হাইকোর্ট অবধি যেতে হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে ধর্মতলায় বামেদের কর্মসূচি দেখে, কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "ওটা সিপিমূলের সভা। এর মধ্যে তৃণমূলও ছিল। তাই পুলিশ আটকায়নি। এটা করছে পঞ্চায়েত ভোটে ভোট কাটাকাটির জন্য।" অন্যদিকে, তৃণমূল বিধায়ক ও পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বিজেপির আন্দোলন বিশৃঙ্খল। সেখানে পুলিশকে কঠোর হতে হয়েছে। এরা পুলিশের নিয়ম মেনে করেছে। বিশৃঙ্খল আচরণ করেনি। তাই কিছু করতে হয়নি।"
যদিও সিপিএম এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "ছাত্র যুবদের আটকে রাখার চেষ্টা করবেন না। শিক্ষা তো হল! ওরা ধর্মতলাতেই করল।" অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, "এটা কি কারও পৈতৃক সম্পত্তি নাকি, যে ওখানে সভা করতে দেবে না? ওখানে তো কংগ্রেস মারা গেছিল। আমরা তো বলছি না। ঠিক করেছে সভা করেছে।"