কলকাতা: চাকরি-বিক্রিতে (Job corruption) দলীয় যোগ রয়েছে বলে জেরায় স্বীকার করেছেন যুব তৃণমূল নেতা (TMC) শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Santanu Banerjee)। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি করল ইডি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, জেরায় শান্তনু দাবি করেছেন, চাকরিপ্রার্থী ছাড়াও অনেক তৃণমূল সদস্য চাকরি পেতে তাঁদের নথি পৌঁছে দিয়েছেন তৃণমূল নেতাদের কাছে। কাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল নথি? শান্তনুকে জেরা করে আপাতত তারই হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছেন ইডি-র তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত নগদ ও সোনাদানা মিলিয়ে ১১১ কোটি টাকা উদ্ধার ও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গতকাল নগর দায়রা আদালতে পেশ করা হয় ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে দাবি, শান্তনুকে নগদে ধাপে ধাপে ৭০-৮০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ। জেরায় শান্তনু দাবি করেন কুন্তল তাঁকে কোনও টাকা দেননি। ইডি সূত্রে দাবি, যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু ও তাঁর পরিবারের ২০টি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। এই সম্পত্তি কেনার টাকার উৎস কী, তা নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ। তদন্তকারীরা জানতে চান, তবে কি কুন্তলের দেওয়া টাকাতেই সম্পত্তি কেনা হয়েছিল? শান্তনুর বাড়ি থেকে যে ৩০০ জন চাকরিপ্রার্থীর তালিকা মিলেছিল তাঁদের বেশ কয়েকজনের চাকরিও হয়েছিল। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে শান্তনু কি সরাসরি টাকা নিয়েছিলেন, খতিয়ে দেখছেন ইডি আধিকারিকরা।
চাকরিপ্রার্থীদের চাকরির জন্য সরাসরি মানিক ভট্টাচার্যর কাছে সুপারিশ করতেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে দাবি, চাকরিপ্রার্থী পিছু চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছেন শান্তনু। তাঁর বাড়ি থেকে মোট ৩১২ জন চাকরিপ্রার্থীর তালিকা পেয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে দাবি, এর মধ্যে প্রায় ২০ জনের নিয়োগ করিয়ে দিয়েছিলেন শান্তনু। এই কুড়ি জনের বিস্তারিত তথ্য এসেছে তাদের হাতে। এমনকী, তাঁর বাড়িতে পাওয়া বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ডের প্রতিলিপি মিলেছে মানিকের বাড়িতে। ইডি সূত্রে দাবি, শান্তনুর পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও লেনদেন হয়েছে।
ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট সামনে রেখে বলাগড়ের যুব তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি।কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করেছিলেন, কাদের কাদের সঙ্গে লেনদেন হয়েছে, কোন চাকরিপ্রার্থীর কাছে টাকা নিয়েছিলেন, সেইসব তথ্য জানতে চায় তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে খবর, আজ আদালতে জানানো হবে নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় কতটা লাভবান হয়েছেন শান্তনু।