কলকাতা: ৫ জানুয়ারি- সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shajahan Arrest) বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়েছিল ইডি। সেখানেই তাদের উপর হামলা হয়। মারধরে মাথা ফাটে ইডি আধিকারিকের। আক্রান্ত হন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও সাংবাদিকরাও। তারপর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না শেখ শাহজাহানের। পুলিশ তাঁর খোঁজ না পেলেও সন্দেশখালির এই তৃণমূল নেতা একাধিকবার আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। পুলিশ যেমন খুঁজে পায়নি, তেমনই ইডি-ও খুঁজে পায়নি। শেষ অবধি বিরোধীদের আন্দোলন, গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ, হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে প্রায় দুই মাসের মাথায় গ্রেফতার হলেন শেখ শাহজাহান (Sheikh Shajahan)।


ইডি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর বর্বর হামলার পর প্রায় ২ মাসের মাথায় গ্রেফতার করা হল শাহজাহানকে। এরই মধ্যে বারবার আক্রমম শানিয়েছেন বিরোধীরা। লাগাতার আন্দোলনে নেমে শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতারি দাবি করেছেন সন্দেশাখালির বাসিন্দারা। তার উপর কলকাতা হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ। তৃণমূল সরকারের উপর চাপ বাড়ছিল। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট করে দেন, সিবিআই, ইডি, পুলিশ, যে কেউ গ্রেফতার করতে পারবে শেখ শাহজাহানকে। এই শুনানিতেই ED-র আইনজীবী বলেন, রাজ্য পুলিশ শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করলে লঘু ধারায় মামলা করা হবে। তাঁর জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। এই আবহেই অবশেষে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করল রাজ্য় পুলিশ।


কবে ঝামেলা, আর ঠিক কোন পথ পেরিয়ে গ্রেফতার করা হল 'সন্দেশখালির বাঘ'কে
৫ জানুয়ারি: রেশন দুর্নীতির তদন্তে, সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali Incident) শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেছিল ED। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ওই বাড়িতে ঢোকার আগেই ED অফিসার এবং CRPF জওয়ানদের ওপর বর্বর হামলা চালায় একাধিক দুষ্কৃতী। ইডি অফিসারের মাথা ফাটে। প্রাণ বাঁচাতে টোটোয় চেপে পালান তাঁরা। অভিযোগ, সেই হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানই। কিন্তু সেই শেখ শাহজাহানের হদিশ পায়নি রাজ্য পুলিশ। যদিও আগাম জামিনের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। মামলাকারী হিসেবে ওকালতনামায় সই করেছেন। তবুও পুলিশ তাঁর টিকি ছুঁতে পারেনি। যদিও সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ, ঝামেলার ঘটনায় প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দার, বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ, আইএসএফ নেত্রী আয়েশা বিবিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ, তাঁরা পরে জামিন পেয়ে যান। শেখ শাহজাহানের সহযোগী উত্তম সর্দার, শিবু হাজরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


১২ ফেব্রুয়ারি: শেখ শাহজাহানের আইনজীবী আদালতে বলেন, যে ২ দিনের রক্ষাকবচ দিতে, তাহলে এখনই হাজিরা দেবেন শেখ শাহজাহান। যা শুনে ED-র আইনজীবী পাল্টা বলেন, 'কথা শুনে এটাই মনে হচ্ছে, ঠাকুর ঘরে কে? আমি তো কলা খাইনি।'


২৩ ফেব্রুয়ারি: রেশন দুর্নীতির পাশাপাশি শেখ শাহাজাহানের বিরুদ্ধে নতুন ECIR দায়ের করে ইডি। পুরনো একটি প্রতারণা মামলার FIR সংগ্রহ করে এই ECIR করা হয়। এই মামলায় জমি দখলের অভিযোগও ছিল। 


বারবার তলব:
এখনও অবধি ED মোট চারবার শেখ শাহজাহানকে তলব করেছে। রেশন দুর্নীতির মামলায় ৩ বার এবং সম্প্রতি দায়ের করা ECIR-এর ভিত্তিতে ১ বার। কিন্তু, একবারও ED-র কাছে হাজিরা দেননি এই তৃণমূল নেতা।


২৯ ফেব্রুয়ারি: সকালে মিনাখাঁ থেকে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করল পুলিশ।


আরও পড়ুন: সন্তানের বয়স ৫ বছরের নীচে? কীভাবে পাবেন এই বিশেষ আধার কার্ড?