আশাবুল হোসেন, রাজীব চৌধুরী ও অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা : নির্বাচনী প্রচার চলার মাঝেই ছুটে আসে গুলি। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন শিনজো আবে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। বাঁচানো সম্ভব হয়নি জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। ঘটনার পর ইতিমধ্যে ধরা পড়েছে আততায়ী। জানা গেছে, অভিযুক্ত টেটসুয়া ইয়ামাগামি জাপানের মেরিটাইম সেল্ফ ডিফেন্স ফোর্সের প্রাক্তন সদস্য। ঘরে তৈরি বন্দুক দিয়েই হামলা চালায় সে।
আর আততায়ীর এই পরিচয় প্রকাশ্যে আসতেই, জাপানের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী থাকা শিনজো আবের খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে, মোদি সরকারের প্রকল্প ‘অগ্নিপথ’ নিয়ে বিতর্ক! সম্প্রতি সেনা বাহিনীতে জওয়ান নিয়োগের জন্য এই প্রকল্পের ঘোষণা করে সরকার।
কী এই অগ্নিপথ
৩ বাহিনীর জওয়ান পদে শুধুমাত্র অগ্নিপথ প্রকল্পেই নিয়োগ করা হবে। চাকরির স্থায়িত্ব হবে ৪ বছর। ৪ বছর পর ২৫ শতাংশকে ভারতীয় সেনায় স্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হবে। বাকি ৭৫ শতাংশকে সেনাবাহিনীতে আর রাখা হবে না। সেক্ষেত্রে অবসরের পর এককালীন ভাতা মিললেও পেনশনের কোনও সুবিধা পাওয়া যাবে না। এরপরই বিক্ষোভের সাক্ষী হয় গোটা দেশ। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে ৪ বছর বাদে এই তরুণ-তরুণীরা বেকার হয়ে যাওয়ার পর কী করবেন? মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করে বিরোধীরা।
আবে হত্যায় অগ্নিপথ বিতর্ক
এই প্রেক্ষাপটে, শুক্রবার শিনজো আবে খুনে জাপানের প্রাক্তন সেনাকর্মীর নাম জড়ানোয়, কংগ্রেসের মুখপাত্র সুরেন্দ্র রাজপুত ট্যুইট করে বলেন, শিনজো আবের হত্যাকারী টেটসুয়া ইয়ামাগামি বিনা পেনশনে জাপানের SDF অর্থাত্ সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। এদিন তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’তেও একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে, যার শিরোনাম, শিনজোর খুনে অগ্নিপথের ছায়া। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, শিনজোর মৃত্যুতে ‘অগ্নিপথ’ নিয়ে মানুষের ক্ষোভের কারণ আরও দৃঢ় হল। তার কারণ, হত্যাকারী টেটসুয়া বিনা পেনশনে জাপানের সেনায় কাজ করতেন।
প্রতিবেদনে আরেকাংশে লেখা হয়েছে, জাপানের মেরিটাইম সেল্ফ ডিফেন্সের প্রাক্তন সদস্য সে (টেটসুয়া ইয়ামাগামি)। তিন বছর কাজ করার পর চাকরি যায়। তারপর থেকে প্রায় কোনও কাজই সে পায়নি। নিরাপত্তাহীনতা এবং চাকরি যাওয়ার কারণে শিনজোর উপর তার ক্ষোভ ছিল বলে জানিয়েছে।
আক্রমণ কুণাল ঘোষের
‘শিনজো আবের খুনিও চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তা কর্মী ছিলেন, পেনশন ও অন্য সুবিধা না পেয়ে ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত অগ্নিবীররাও ভুগতে পারেন ডিপ্রেশনে, সামরিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যুবকদের বিপথে চালনা করতে পারে অশুভ শক্তি’, মন্তব্য তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও।
সোমবারই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বে অগ্নিপথ নিয়ে বৈঠক হবে। তাতে যোগ দেবেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বৈঠকে এই প্রকল্পের বিরোধিতা করবেন তিনি।
আরও পড়ুন- ভাটপাড়ায় উদ্ধার ৫০টি তাজা বোমা, ফের হয়ে উঠছে দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল ?