কৌশিক গাঁতাইত ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল: আসানসোলে হোটেলে হাড়হিম করা শ্যুটআউট। হোটেলে ঢুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে মালিককে পরপর গুলি করা হয়েছে। 


কী অভিযোগ:
আসানসোলে পুলিশ লাইনের পাশেই রয়েছে ওই হোটেল। সেখানে ঢুকে মালিককে গুলি দুষ্কৃতীদের। হোটেলের লাউঞ্জে বসে ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনার সময় আচমকা পরপর গুলি করা হয়। শহরের বুকে অভিজাত হোটেলের মালিককে পরপর গুলির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ওই ব্যবসায়ীকে। শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ওই ব্যবসায়ী মারা গিয়েছেন। পলাতক ২ দুষ্কৃতীর খোঁজে পুলিশের তল্লাশি। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট, গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিকরা রয়েছেন ঘটনাস্থলে।


যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে তার ১০০ মিটারের মধ্যেই মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়ি। ২ জন আততায়ী ছিল। দুজনের হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। নিরাপত্তারক্ষীকে আগ্নেয়াস্ত্রের সামনে রেখে ভয় দেখিয়ে সরানো হয়। তারপরে ঢুকেই কোনও কথা না বলেই গুলি চালানো হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন। ৪টি গুলি, মাথায়, বুকে, পেটে গুলির আঘাত রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।   


পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে প্রথম গুলি, মুহূর্তের মধ্যে দ্বিতীয়বার ট্রিগারে চাপ। লুটিয়ে পড়েছে টার্গেট, তবুও ছাড় নেই। ফের ছুটল বুলেট! তৃতীয়বার। শুক্রবার সন্ধে সাড়ে ৭টা। আসানসোলের অভিজাত আপকার গার্ডেনে,মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়ি থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরত্বে। পুলিশ পোস্ট থেকে ২০০ মিটার দূরে। হোটেল মীরা ইন্টারন্যাশনালে ঢুকে, মালিককে খুন করে গেল আততায়ীরা! 


মৃতের পরিচয়:
পুলিশ] সূত্রের খবর, মৃতের নাম অরবিন্দ ভগত। হোটেল-সহ একাধিক ব্যবসার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। এদিন, সন্ধেয় হোটেলের লাউঞ্জে বসে, ২ ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসায়িক আলোচনা সারছিলেন অরবিন্দ। সেই সময় নিরাপত্তারক্ষীকে গান পয়েন্টে রেখে হোটেলে ঢুকে পড়ে ২ আততায়ী! এরপর মিনিট খানেকের অপারেশন!


হাসপাতাল সূত্রের খবর, আসানসোল থেকে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হয় অরবিন্দের। তাঁর মাথা, বুক ও পেটে মোট ৪টে গুলি লেগেছে। ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের অফিসাররা, হোটেলে পৌঁছন। সূত্রের খবর, সম্প্রতি একটি জমি কেনার তোড়জোড় করছিলেন অরবিন্দ ভগত। খুনের ঘটনার সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ আছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।


২ আততায়ী কোনদিকে পালাল, কীভাবে পালাল - রাস্তায় লাগানো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। বাংলা-ঝাড়়খণ্ড সীমানায় শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি।


প্রাক্তন পুলিশকর্তা সলিল ভট্টাচার্য বলেন, 'ওই এলাকায় শিল্প এলাকা, খনি এলাকা, অত্যন্ত অস্থির এলাকা। যেখানে ঘটনাটি হয়েছে তার কাছেই রয়েছে মন্ত্রীর বাড়ি। তার কিছু দূরেই রয়েছে পুলিশের কেন্দ্র। যা হয়েছে মনে হয়েছে পুলিশের ভয় আর নেই। মন্ত্রীর জীবনহানিও হতে পারে। এটা কেন হয়েছে, এখুনি বের করা প্রয়োজন।'


আরও পড়ুন: বাড়ির পরিচারিকার চোখেই পড়ল ধরা, বড় বিপদ এড়াল গোবরডাঙা