শিলিগুড়ি: দুর্নীতি ইস্যুতে দিনকয়েক আগেই ডিওয়াইএফআইয়ের উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল শিলিগুড়ির তিনবাত্তি মোড়। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই এবার এবিটিএ, এবিপিটিএ-র কর্মসূচি ঘিরে তুলকালাম। বকেয়া ডিএ, জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিল সহ ১১ দফা দাবিতে এদিন শিলিগুড়ির নৌকাঘাট থেকে মিছিল শুরু করে ২ সংগঠন। তিনবাত্তি মোড়ের কাছে এসে ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় ব্যাপক ধস্তাধস্তি। এরপরই বিক্ষোভকারীদের ওপর ছোড়া হয় জলকামান। চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্ষোভকারীকে। নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা কমিটির সদস্য প্রণব দাসের কথায়, মহিলা পুলিশ ছাড়া চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা সাধারণ মানুষের আন্দোলন। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, জলকামান ছুড়েছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের আলোচনার পর ঠিক হয় উত্তরকন্যায় গিয়ে স্মারকলিপি দেবেন ৫ প্রতিনিধি। এরপর মিছিল শেষে তিনবাত্তি হাইস্কুলের মাঠে সভায় যোগ দেন বিকাশরঞ্জন ঘোষ। উত্তরকন্যা অভিযানে ফের তুলকালাম, ১১ দফা দাবিতে রাস্তায় ABTA, ABPTA। চাঁদিফাটা গরমে নাজেহাল শিলিগুড়িও। কিন্তু তাতে কমছে না রাজনৈতিক উত্তাপ।
এদিকে আদালতের নির্দেশ মতো আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদের সঙ্গে সরকারের আলোচনায় বসার সময়সীমা শেষ হচ্ছে সোমবার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি করল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করা এই সংগঠন জানিয়েছে, রাজ্য সরকার অন্য কোনও সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকলে সেই দায় তাঁরা নেবেন না। বকেয়া DA-র দাবিতে ধরে শহিদ মিনারে চলছে ধর্না-অবস্থান।
গত বছরের ২০ মে, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৩ মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া DA মেটাতে হবে। রাজ্য সরকার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানালেও ২২ সেপ্টেম্বর তা খারিজ করে দেয় আদালত। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ৪ নভেম্বর, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। এ দিকে, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের দাবি, বকেয়া ডিএ-র দাবিতে ১০ মার্চের ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারীদের বেতন কাটার নির্দেশিকা পাঠানো হচ্ছে সরকারের তরফে।
বকেয়া DA-র দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মীদের অবস্থান-বিক্ষোভের ৭২ দিনে দিল্লিমুখী হন আন্দোলনকারীদের দ্বিতীয় দল। এদিন দুপুরে ও বিকেলে রাজধানী এক্সপ্রেস ও দুরন্ত এক্সপ্রেসে চড়ে আরও শ-আড়াই আন্দোলনকারী দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন। পাশাপাশি, শহিদ মিনারেও চলে ধর্না কর্মসূচি। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আমরা প্রথম থেকেই কথা বলতে আগ্রহী। হাইকোর্টের মুখ্যসচিব বা অর্থসচিবকে বৈঠকে বসতে বললেও, সরকারের তরফে এখনও কোনও বার্তা মেলেনি বলে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ জানিয়েছিল সেবারেও।