সনৎ ঝা, দার্জিলিং: পুরভোটের (Municiality Election) দিন ঘোষণা না হলেও শিলিগুড়িতে (Siliguri) প্রার্থীপদ নিয়ে তৃণমূলের (TMC) অসন্তোষ সামনে চলে এল। শাসক শিবির সূত্রে খবর, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হতে পারেন গৌতম দেব (Gautam Deb)। এই জল্পনা চাউর হতেই বিরোধিতায় সরব হয়েছে স্থানীয় নেতৃত্ব। এমনকি এলাকার কাউকে প্রতিনিধি চেয়ে দাবিসনদ পাঠানো হয়েছে দলের জেলা সভানেত্রীর কাছে।


পুরভোটে (Municiality Vote) কি শিলিগুড়ির (Siliguri) ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হতে পারেন গৌতম দেব? তৃণমূলের (TMC) একটি দাবিসনদকে ঘিরে জোরাল হচ্ছে প্রশ্ন। সেই সঙ্গে ঘোরাল হচ্ছে রাজনীতি। সম্প্রতি শিলিগুড়ি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১২৫ জন তৃণমূল সমর্থকের সই সম্বলিত একটি দাবিসনদ দলের দার্জিলিং (Darjeeling) জেলা সভানেত্রীর কাছে পাঠানো হয়। 


তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই দাবিসনদে আসন্ন পুরভোটে এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে থেকে কাউকে প্রার্থী করার আর্জি জানানো হয়েছে। পুরভোটের দিনক্ষণ যখন ঘোষণা হয়নি, তখন আগেভাগে এমন আবেদন কেন? নেপথ্যে উঠে আসছে প্রার্থী অসন্তোষের গুঞ্জন। শিলিগুড়ি পুরসভার (Siliguri Municipality) প্রশাসক পদে রয়েছেন তৃণমূল নেতা গৌতম দেব (Gautam Deb)। 


এবার বিধানসভা ভোটে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি (Dabgram-phoolbari) কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। তারপরই তাঁকে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান করে তৃণমূল। এর আগে গৌতম দেব (Gautam Deb) পুরভোটে মূলত ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এসেছেন। শিলিগুড়ি পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডটি বর্তমানে মহিলা আসন হিসেবে সংরক্ষিত। 


গৌতম দেবকে পুরভোটে জিততে হলে অন্য ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াতে হবে। শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে এবার জয়ী হয়েছে বিজেপি(BJP)। বিধানসভা ভোটের পুরসভা ভিত্তিক ফল অনুযায়ী, শুধুমাত্র ১৫ এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। শাসক শিবির সূত্রে খবর, দলের অন্দরে জোর জল্পনা, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হতে পারেন গৌতম দেব। 


১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ দের কথায়, এই ওয়ার্ডে স্থানীয় নেতৃত্বের যে যোগ্য ও জনপ্রিয় তাঁকেই প্রার্থী করা হোক। প্রশ্ন - এবার গৌতম দেবের নাম উঠে আসছে ঠিকই। এখানে তো আগে তাইই হয়েছে. এবার তাহলে গণস্বাক্ষর করে দাবি জানাতে হল কেন? 


সনৎ ঝা, দার্জিলিং তৃণমূল নেতা শিলিগুড়ি পুরসভার iliguri Municipality) ও প্রশাসক গৌতম দেব জানিয়েছেন, ওরা কী লিখেছে আমি জানি না। দলের কোনও পদাধিকারী আমি নই। কে কোথায় প্রার্থী হবে, তা দল ঠিক করবে। আমি প্রার্থী হব কিনা, তা নিজেই জানি না। ৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবন। যতবার দাঁড়িয়েছি পুরসভায় জিতেছি। বিধানসভায় এই একবারই হেরেছি। ফলে ওদের এই বক্তব্য নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।


জল্পনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। দার্জিলিং-এর তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত জানান, দলের যে প্রার্থী চয়ন প্রক্রিয়া নীতি মেনেই হয়। এখনও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। কোনও কোনও কাগজে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এই বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালিয়েছে। কর্মীদের বলব চিলের দিকে না তাকিয়ে নিজের কানটা দেখুক।


দার্জিলিং-এর সিপিএম সম্পাদক জীবেশ সরকারের দাবি, জবরদখলের রাজনীতি তৃণমূল করেছে। তারই ফল করতে হচ্ছে ওদের। ক্ষমতায় বামপন্থীরাই আসবে। যাকে তাকে দল ভেঙে জয়েন করিয়ে, এখন তার ফল ভুগতে হবে। সবমিলিয়ে প্রার্থী নিয়ে টানাপোড়েনের জল কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার।