সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swastha Sathi Card) থাকা সত্ত্বেও পরিষেবা দিতে অস্বীকার করার অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ির মেডিকা হাসপাতালের (Siliguri Medica Hospital) বিরুদ্ধে। বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটছে রোগীর পরিবার। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানিয়েছিলেন, 'যদি কেউ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে অসুবিধা করে থানায় গিয়ে ডায়েরি করবেন। কার্ডের পিছনে একটা নম্বর দেওয়া আছে, সেখানে ফোন করবেন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।


স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও, কোনও হাসপাতাল চিকিৎসা করতে অস্বীকার করলে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী (Cm Mamata Banerjee)। তা সত্ত্বেও রোগীর পরিবারকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ির মেডিকা হাসপাতালের বিরুদ্ধে।


গত ১৮ অক্টোবর, ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়ির মেডিকা হাসপাতালে ভর্তি হন স্থানীয় দেশবন্ধু পাড়ার বাসিন্দা বছর পঁয়তাল্লিশের রূপা নাগ। রোগিণীর পরিবারের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
 
শেষপর্যন্ত নগদ ১০ হাজার টাকা জমা দিলে তাঁকে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু হলেও, সুস্থ হওয়ার পর নানা অছিলায় রোগিণীকে আটকে রাখা হয়। এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ির মেডিকা হাসপাতালের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দেয় রূপা নাগের পরিবার। 


সেই ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর, গত ২৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। ২৮ অক্টোবর, শিলিগুড়ি প্রধাননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে রোগিণীর পরিবার। 


রোগিণীর ছেলে রাকেশ নাগ বলছেন, ভর্তি করতে গেলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে অস্বীকার করে। হাসপাতাল থেকে ছাড়তেও চাইছিল না। ফেসবুকে দেওয়ার পর ছাড়ে। আমরা চাইছি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।


অভিযোগকারীর আইনজীবী সাগ্নিক ভৌমিক বলছেন, আমরা আইনি সহায়তা দিচ্ছি এই পরিবারকে। প্রচুর নার্সিং হোম এভাবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিচ্ছে না। কিন্তু অনেকেই সাহস করে অভিযোগ জানাচ্ছেন না।


যদিও রোগিণী ও তাঁর পরিবারের অভিযোগই মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়ির মেডিকা হাসপাতালের স্বাস্থ্য প্রশাসক গৌরব রায় জানাচ্ছেন, রোগীর বাড়ির লোক ভর্তির সময়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কথা জানাননি। কার্ড থাকলে পরিষেবা দেব না, এমন আমরা কখনই বলিনি।


এদিকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও, রোগী-হেনস্থার খবর প্রকাশ্যে আসতেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। 
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, রাজ্য সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালানো সম্ভব নয়। বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলির বিল মেটাচ্ছে না। ফলে অসুবিধা হচ্ছে। রাজ্যকে আজ না হয় কাল, আয়ুষ্মান প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতেই হবে।


শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতা ও পুরসভার প্রশাসক গৌতম দেব জানিয়েছেন, এই ধরনের অভিযোগ পাচ্ছি। কিছু নার্সিংহোম সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করছে। জেলা শাসককে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। মেডিকা হাসপাতালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে রোগীর পরিবার।