কলকাতা: ন্যানো বিদায়ের ১৫ বছর পর সিঙ্গুরে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার (WB Govt)।  গতকালই টাটাকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে, মমতাকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কিন্তু সেই ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে গিয়ে যেন কোনওভাবেই সাধারণ মানুষের করের টাকায় কোপ না পড়ে, তা এদিন স্পষ্ট করলেন তিনি। ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই, আজ শাসকদলকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু।


এদিন শুভেন্দু বলেছেন, 'জনগণের করের টাকায় সিঙ্গুর-মামলায় টাটাদের ক্ষতিপূরণ দিলে বৃহত্তম আন্দোলন হবে। দলের তহবিল থেকে টাটাদের ক্ষতিপূরণ দিক তৃণমূল। পাশাপাশি শাসকদলের তহবিলে এই মুহূর্তে কতটা পরিমাণ অর্থ মজুত আছে ? সেই হাঁড়ির খবর আনলেন সামনে।' তৃণমূলের তহবিলে ৮০০ কোটি টাকা আছে', বলে সংযোজন শুভেন্দুর।


মূলত,  টাটা মোটরস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে,ন্যানো কারখানা না হওয়ায় টাটাকে সুদ-সহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ডব্লুবিআইডিসি-কে। ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও ১১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। ২০১৬-র ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো ক্ষতিপূরণ পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত সুদ দিতে হবে। ট্রাইবুনালের রায় অনুযায়ী, রাজ্য সরকার যতদিন না ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে ততদিন সুদ দিতে হবে। ৭ বছরে ১১% সুদ ধরলে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে', মামলার খরচের জন্য ডব্লুবিআইডিসি-কে'দিতে হবে আরও ১ কোটি টাকা,বিবৃতি টাটা মোটরসের।


 প্রসঙ্গত, একটু যদি ফিরে তাঁকানো যায়, বছর পনেরো আগে রতন টাটা বলেছিলেন, 'মমতার জন্য সিঙ্গুর ছাড়লাম।' রাজ্যের অন্যতম এই বড় বিষয়টি (Tata Motor Case) নিয়ে বহু জল ঘোলার পর, বাইশ সালে শিলিগুড়িতে দলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে মমতা (Mamata Banerjee) এই অভিযোগ উৎখাত করে বলেছিলেন, 'তিনি নন, টাটাকে তাঁড়িয়েছে সিপিএমই।' যদিও বছর পেরোলেই, বিষয়টি এতটুকুও ফিকে হয়নি। মূলত বাংলায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল বহু যোগ্য বেকারদের কর্মসংস্থান। যা আরও বিতর্ককে উসকে দেয়। 


একুশে তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর মমতার মুখে শোনা গিয়েছিল মূল্য লক্ষ্য হবে এবার কর্ম সংস্থানই। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মলনে তেমন আশাও দেন শিল্পকর্তারা। তবে অতীতের এই ক্ষতি ভরাট করা যাবে কি ? ঠিক এমনই এক পরিস্থিতিতে গতকাল টাটা মোটরস বিবৃতি প্রকাশ্যে আসার পর,  মমতাকে তীব্র আক্রমণ করে ট্যুইট করেছেন শুভেন্দু। ট্যুইটে শুভেন্দু বলেছেন, বাংলার শিল্পের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।নিজের রাজ্য়েই চাকরি প্রার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়া থেকে প্রতারিত হতে হয়েছে। আজকের রায় বাংলার শিল্প বিপর্যয়ের ওপর নুনের ছিটে।'