কলকাতা: কালই বাংলায় এসআইআর ঘোষণা। কাল বিকেল সোয়া চারটেয় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক বৈঠক। কবে থেকে SIR, জানাবে কমিশন। কার্যত শেষ পর্যায়ে রয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন অর্থাৎ SIR প্রক্রিয়া। আর এই প্রক্রিয়ায় সবথেকে গুরুদায়িত্বে রয়েছেন বুথ লেভেল অফিসার কিংবা BLO-রা। তাদেরই একটা বড় অংশ হলেন সরকারি সকুলে কর্মরত শিক্ষক। একদিকে ছাত্র পড়ানো, খাতা দেখা। অন্যদিকে ভোটার তালিকার সংশোধনের গুরুদায়িত্ব। সব মিলিয়ে কার্যত পেশাগত দায়বদ্ধতার দোটানায় পড়েছেন তাঁরা।

Continues below advertisement

সোমবার বিকেলে দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সাংবাদিক বৈঠক জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। ওইদিনই কি ঘোষণা হতে পারে পশ্চিমবঙ্গে SIR শুরুর দিনক্ষণ? এই জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখন চর্চায় BLO বা বুথ লেভেল অফিসারদের ভূমিকাও। একদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, BLO-দের SIR সংক্রান্ত কাজের সময় অন্য কাজ করতে হবে না। এই নিয়ম প্রযোজ্য থাকবে BLO হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত সকুল শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও। SIR-এর সঙ্গে যুক্ত কোনও কর্মী-আধিকারিককে বদলি করা যাবে না। আর এই বুথ লেভেল অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যে একটা বড় অংশে রয়েছেন সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সকুলগুলির শিক্ষকরা। ছাত্র পড়ানোর পাশাপাশি, এখন তাঁরাও লেগে পড়েছেন ভোটার তালিকা সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে। কাজেই, দুই কর্মকাণ্ডের মধ্যে সেতুবন্ধন ঘিরে কার্যত পেশাগত দায়বদ্ধতার দোটানায় পড়েছেন তাঁরা।

যেমন, পূর্ব মেদিনীপুরের ডিহি-জামতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীলাদ্রি শেখর পন্ডা। নন্দীগ্রাম বিধানসভার BLO হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তালিকা সংশোধনের কাজে তিনি ব্যস্ত থাকলে সকুলের কাজও ব্যাহত হতে পারে। কার্যত একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন, পূর্ব বর্ধমানের দেবীপুর স্টেশন হাই স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক সঞ্জীব মণ্ডল। মেমারি বিধানসভার ২৫ নম্বর বুথের BLO-র দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, SIR সংক্রান্ত ম্যাপিংয়ের কাজেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সকুলের কাজকর্ম। সময় দেওয়া যাচ্ছে না পরিবারকেও।

Continues below advertisement

পূর্ব বর্ধমানের মেমারির BLO সঞ্জীব মণ্ডল বলছেন, 'এই যে দায়িত্ব হচ্ছে,এতে ছাত্রছা্ীদের পড়াোনার ক্ষতি। এখন ম্যাপিং এর কাজ চলেছ। ছাত্রদের পড়াশোনার কাজ বাদে আরও কাজ আছে, তাও হচ্ছে না প্লাস পড়াশোনা হচ্ছে না, উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা দেখার কাজও আছে তারজে। একদিকে সকুল. বিএলও ও পরিবারকে সময় দিতে পারছে না।'

নুদিপুর ভূপেন্দ্র স্মৃতি বিদ্যামন্দিরের শারীরশিক্ষার শিক্ষক দেবব্রত দত্ত। তিনি মেমারি বিধানসভার ২১২ নম্বর বুথের দায়িত্বে রয়েছেন। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির BLO দেবব্রত দত্ত বলেছেন, 'সকুলে রশিক্ষা দিতে পারছে না। শিক্ষক হিসেবে প্রথম দায়িত্ব, সকুলের কম্পিউটার ওয়ার্ক তাকেই করতে হয় সামনে পরীক্ষা .সেমেলস্টার, সেটার প্রশ্নপত্র বানানো তাও হচ্ছে া। শিক্ষআর ওক্ষতিগ্রস্ত। পরবর্তীতে, পরিবারকেও সময় দিতে পারছে না।'

এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও সমানে উত্তেজনা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলছেন, 'রাজ্য সরকার একদিকে টানাটানি করছে, আরেক দিকে কেন্দ্রও করছে। এটা বাস্তবসম্মত নয়।'

রাজনীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না থাকলেও সাম্প্রতিক কালেই এই বুথ লেভেল অফিসারেরাই আবার এসেছেন রাজনীতির কেন্দ্রে। একদিকে, রাজনৈতিক দলের লাগাতার হুমকি-হুঁশিয়ারি! অন্যদিকে কমিশনের কড়া বার্তায় কার্যত চিঁড়ে চ্য়াপ্টা অবস্থা বুথ লেভেল অফিসার বা BLO-দের। এই আবহে, বুথ লেভেল অফিসারদের বাড়তি দায়িত্ব ঘিরেও রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে তরজা।