হিন্দোল দে ও আশাবুল হোসেন , কলকাতা : তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সোনালি গুহ ( Sonali Guha ) । দুর্নীতি থেকে ডিএ, বিভিন্ন ইস্য়ুতে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। তৃণমূল ( TMC ) ছেড়ে বিজেপিতে ( BJP ) গিয়ে, একুশের বিধানসভা ভোটের পর, আবার তৃণমূলে ফিরতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের এই একদা ছায়াসঙ্গী। কিন্তু, তা আর হয়নি। এবার ফের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব তিনি।
' মমতাদিই দুর্নীতিতে আকৃষ্ট'
বিজেপি নেত্রী সোনালি গুহ বলেন, মমতা বলতেন দুর্নীতি হঠাও, CPM হঠাও রাজ্য বাঁচাও। CPM তো হঠে গিয়েছে, কিন্তু সেই মমতাদিই দুর্নীতিতে আকৃষ্ট, নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছেন।
মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের একদা সর্বক্ষণের সঙ্গী। দলের বৈঠক হোক, কিংবা আন্দোলন, ধর্না, একটা সময় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের প্রায় ছায়াসঙ্গী ছিলেন সোনালি গুহ। এবার সেই তিনিই তৃণমূলের বিরুদ্ধে তুললেন বিস্ফোরক অভিযোগ!
'শুধু আপনারা খাবেন আর কেউ খাবে না, সেটা হবে না'
বিজেপি নেত্রী সোনালি গুহ বলেন, ' এখন তৃণমূল কংগ্রেস করলেই লোকে চোর চোর বলছেন। এই তৃণমূল কংগ্রেস আমরা যে, তৃণমূল তৈরি করেছিলাম, সেটা এমন ছিল না। সততার প্রতীক বলতাম মমতাকে, আর এখন তো তৃণমূল কংগ্রেস মানেই কোটি কোটি টাকা। আর সে কারণেই বলছি, শুধু আপনারা খাবেন আর কেউ খাবে না, সেটা হবে না। '
পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন,' যে অভিযোগ আপনি তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কে করছেন তাতে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন কেন? বিজেপি একটা ধাপার মাঠের পার্টি। বিজেপি করতে হলে, সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে বিজেপি করুন। তার জন্য কুৎসা করতে কেন হবে? আর যদি ফিরতে হত, তাহলে কুৎসা কেন? '
গত কয়েক বছরে সোনালি গুহর রাজনৈতিক অবস্থানও বদলেছে বারবার। একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে অভিমানে কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। এরপর বিজেপিতে যোগ দিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা ছায়াসঙ্গী বলে পরিচিত সোনালি গুহ। তবে দলবদলের পর, সাতগাছিয়ার চারবারের তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহকে টিকিট দেয়নি বিজেপি-ও। শেষমেশ বিধানসভা ভোটে বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। আর তারপরই বিজেপিতে বেসুরো গাইতে শুরু করেন সোনালি। ট্যুইটারে তিনি লেখেন,
'আবেগপূর্ণ হয়ে, চরম অভিমানে, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে অন্য দলে গিয়েছিলাম। সেটা ছিল আমার চরম ভুল সিদ্ধান্ত। মাছ যেমন জল ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনই আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না! দিদি আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। দয়া করে ক্ষমা করে দিন। আপনি ক্ষমা না করলে আমি বাঁচব না। আপনার আঁচলের তলে আমাকে টেনে নিয়ে, বাকি জীবনটা আপনার স্নেহতলে থাকার সুযোগ করে দিন!'
কিন্তু, তৃণমূল সোনালিকে ফিরিয়ে নেয়নি। এরপরই সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ডিএ আন্দোলনকারীদের মহামিছিলে হাজির হয়ে, তৃণমূলকে কড়া ভাষায় নিশানা করেন সোনালি গুহ। অভিষেককেও নিশানা করতে ছাড়েননি সোনালি। তাঁর সাফ কথা, ' দুর্নীতি থেকে মুখ ঘোরানোর জন্যই তিনি এই নবজোয়ার করছেন। তিনি নেতাই নয়, নবজোয়ারের কোনও প্রভাব পড়বে না। মমতা জননেত্রী, অভিষেক কোনও সংগ্রামই কখনও করেননি।'
তৃণমূলের সোনালি অধ্য়ায় এখন অতীত। কিন্তু, সোনালির ভবিষ্য়ৎ কী? সেই উত্তরও ভবিষ্য়তের ঝুলিতই।
আরও পড়ুন :
গরমকালে জল ঠান্ডা রাখতে ফ্রিজকেও হার মানাবে মাটির কুঁজো! কেন ঠান্ডা থাকে জল?