জয়দীপ হালদার, কাকদ্বীপ(দক্ষিণ ২৪ পরগনা) : ঘূর্ণিঝড় গুলাব ও ঘূর্ণাবর্তের জোড়া ফলার মোকাবিলায় তৎপর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। বিশেষ করে সুন্দরবনের প্রত্যেকটি ব্লকের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগর, পাথরপ্রতিমা, রায়দিঘি, গোসাবা, কুলতলি, ক্যানিং, বাসন্তী এলাকায় পুলিশ, মৎস্য দফতর ও পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে লাগাতার মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। প্রতিটি পঞ্চায়েতে শুকনো খাবার, তার্পোলিন মজুত করা হয়েছে। জলের পাউচ মজুত করা হয়েছে। সেচ, বিদুৎ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের বিশেষভাবে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক পি উলগানাথন।


ইতিমধ্যে জেলার সব বন্দরে ফিরে এসেছে মৎস্যজীবীদের ট্রলার। মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে আজ থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্র বা নদীতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের ২৫ সদস্যের একটি দল কাকদ্বীপ পৌঁছে গেছে। কাকদ্বীপের মুড়িগঙ্গা নদীর উপকূলের বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। 


এদিকে এলাকার বিডিও দিব্যেন্দু সরকার নিজেও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘূর্ণি ঝড়ের সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে মৌসুনী দ্বীপের বাসিন্দাদের। নামখানা ব্লক আধিকারিক শান্তনু সিংহ ঠাকুর উপকূলবর্তী প্রতিটি এলাকার মানুষকে সতর্ক করছেন। প্রয়োজনে ফ্লাড সেন্টার, স্কুল বা পাকা বাড়িতে উঠে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রবিবার থেকে ঝড়- বৃষ্টি শুরু হবে বলে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস। সুন্দরবনের বাসিন্দারা আবারও দুর্যোগের আশঙ্কায় রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত জেলা প্রশাসনও।


আজ সকাল থেকে ঝরখালি কোস্টাল থানার পক্ষ থেকে মৎস্যজীবী থেকে সাধারণ মানুষকে মাইকিং করে সাবধান করা হচ্ছে। পাশাপাশি গোসাবা ব্লকের গোসাবা, ছোট মোল্লাখালি, কচুখালিতে গোসাবা ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে প্রচার শুরু হয়েছে।


আরও পড়ুন ; নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা, বুধবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস


প্রসঙ্গত, দুর্যোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপ আগামী ১২ ঘণ্টায় পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড়ে। এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সূত্রের খবর, আগামীকাল বিকেলে এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশার গোপালপুর ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের মাঝে কলিঙ্গপত্তনমের কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে। এর জেরে রাজ্যেও ফের বৃষ্টি শুরু হবে। আজ থেকেই দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে। কাল থেকে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টি বাড়বে। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হবে। উপকূলবর্তী এলাকায় বইবে ঝোড়ো হাওয়া। অতি বৃষ্টিতে নদীগুলির জলস্তর বাড়ায় নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শহরাঞ্চলেও ফের জল জমার সম্ভাবনা। সমুদ্র উত্তাল থাকায় আজ থেকে বুধবার পর্যন্ত মত্স্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিষেধ।