ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, ভাঙড় : মনোনয়নে রক্তাক্ত ভাঙড় (Bhangar)। টানা তিন ঘণ্টা ধরে চলল বোমাবাজি, হিংসা। শোনা গেল গুলির শব্দ। মনোনয়ন শেষ হতেই এলাকা থেকে বেরিয়ে গেল একের পর এক গাড়ি। কারা ছিলেন ওই গাড়িতে ? ঘনাচ্ছে রহস্য।
বোমা, গুলি, সন্ত্রাস, রক্তপাত, মৃত্যু ! ভাঙড়ের বারুদগন্ধ আকাশে তিন দিন ধরে এই শব্দগুলোই ঘোরাফেরা করেছে। মনোনয়নের ষষ্ঠীতে বলি হয়েছে তরতাজা প্রাণ। বৃহস্পতিবার, মনোনয়নের শেষ দিন, টানা ৩ ঘণ্টা ধরে অপারেশন চলে ভাঙড়ে ! বিজয়গঞ্জ বাজারে যখন বোমা-গুলি নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা, পুলিশ তখন ব্যস্ত সাংবাদিকদের আটকাতে। যে গলির সামনে সাংবাদিকদের আটকানো হয় তার ঠিক ১০০ মিটার দূরে তখন রীতিমতো তাণ্ডব চলছে।
দুপুর ২টো ৫ থেকে, একের পর এক বোমা গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে ভাঙড়। এর পেছনে তৃণমূল নেতা হাকিমুল ইসলাম ও ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি পরস্পরে এক অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
দুপুর তিনটে, অর্থাৎ, মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনের শেষ মুহূর্ত, তখনই দেখা যায়, সকালে যে গলির মুখে সাংবাদিকদের আটকানো হয়েছিল সেই গলি থেকে একের পর এক গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ওই গাড়ির সামনে গিয়ে কথা বলতে দেখা যায় তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের ছেলে হাকিমুলকে। যেখানে দিনভর অশান্তি, রক্ত ঝরল। মনোনয়নের শেষে সেখান থেকে প্রায় ৩৫টা গাড়ি করে কারা বেরোল ? পুলিশের নজরই বা এড়াল কীভাবে ? উঠছে প্রশ্ন।
মনোনয়ন পর্বের শেষদিন সহ টানা চারদিন ধরে অশান্ত থাকল ভাঙড় (Bhangar)। কার্যত দৃষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে ভাঙড়ে সন্ত্রাসের অভিযোগ জানিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) সামনে ধর্নায় বসার পর নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার গাড়ি আটকে ক্ষোভ উগরে দেন নৌশাদ সিদ্দিকি (Nawsad Siddique)। পাশাপাশি নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কা করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নিরাপত্তার আবেদনও জানান আইএসএফ বিধায়ক (ISF MLA)। তাঁর কথায়, 'রাজ্য পুলিশের বদনাম করতে চাই না। কিন্তু এত রাজনীতি সেখানে ঢুকে গেছে ও তাঁরা যা সমস্ত কাজকর্ম করছে বলতে বাধ্য হচ্ছি। তবে দেশে আইন-কানুন রয়েছে। আশা রাখি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে মিলে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠ ভোট করানোর ভূমিকা নেবে রাজ্য পুলিশ।'