রঞ্জিত হালদার, বারুইপুর : বারুইপুরে তৃণমূল কর্মী সাইদুল আলি শেখকে খুনের ঘটনায় মূল দুই অভিযুক্ত আজিজুল শেখ ও সাদ্দাম শেখ এখনও অধরা। মূল অভিযুক্তরা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা এলাকা। জনরোষে অভিযুক্তদের বেশ কয়েকজনের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। দু'টি ভ্যান ভেঙে জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় বারুইপুরের বলবন এলাকায়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


শনিবার রাতে ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। বারুইপুরের মদারহাট পঞ্চায়েতের বলবন এলাকার ঘটনা। পেশায় গাড়ি চালক সাইদুলকে শনিবার রাতে এলাকার একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় বারুইপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।


স্থানীয় সূত্রের খবর, জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাইদুলের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল এলাকার কয়েকজনের। তার জেরে খুন করা হতে পারে বলে অনুমান করছেন কেউ কেউ। পরিবারের সদস্যের দাবি, সাইদুলকে হিংসা করত এলাকার কেউ কেউ। তার জেরে তার উপর হামলা চালানো হয়।


গতমাসে এই জেলাতেই তৃণমূল নেতা 'খুনের' পাল্টা 'খুন', পর পর বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছিল। কাকভোরে জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুনের অভিযোগ উঠেছিল। ৫ কিমি দূরের গ্রামে তাণ্ডবের ঘটনা ঘটেছিল। জয়নগরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। পাল্টা আততায়ী অভিযোগে একজনকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল।  বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামী সইফুদ্দিন লস্করকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল বলে দাবি জানানো হয়েছিল। বাড়ির কাছেই শ্যুটআউট, পাল্টা তাড়া করে এক অভিযুক্তকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল। এরপরেই গ্রাম ঘিরে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে আগুন, মারধরের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল।


সেসময় তৃণমূল বিধায়ক ও পুরমন্ত্রী  ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন,'আমি বলতে চাই সিপিএম, তোমার হার্মাদ, তোমার খুনি যত আছে নিয়ে এসো। আমরা তৃণমূল কংগ্রেস দাঁড়িয়ে আছি, একটা একটা করে খুন করো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সৈন্যকে তোমরা শেষ করতে পারবে না। পারবে না। পারবে না।' ফিরহাদ হাকিম আরও বলেছিলেন, 'সইফুদ্দিন লস্কর কী অন্য়ায় করেছে? কোনও বড় মানুষের টাকা মেরে দিয়েছে? কোথাও কারও স্বার্থে ঘা লেগেছে? না। সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক কারণে যাদের সইফুদ্দিন লস্কর যদি থাকে, তাহলে এখানে সিপিএমের পায়ের তলার মাটি পাবে না। শুধু তার জন্যে একটা লোককে, হত্যা করে দিল।  একটা অনুরোধ আপনাদের আর কেউ এলাকায় সিপিএমকে বিশ্বাস করবেন না। সিপিএম মানেই বিজেপি।'