হিন্দোল দে, দক্ষিণ ২৪ পরগণা: এলাকায় ঢুকেছে দক্ষিণরায়। শীত কমলেও, বাঘের ভয়ে কাঁপুনি কুলতলিতে। এখনও অধরা রয়্যাল বেঙ্গল। আরও পশ্চিমদিকে সরে ঘাঁটি গাড়তে পারে পিয়ালি নদীর ধারে পর্যটকপ্রিয় কেল্লার আশপাশে। ঘুম উড়েছে প্রশাসনের।


দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে এখনও বাঘকে খাঁচাবন্দি করা যায়নি। গতকাল কুলতলির ৫ নম্বর গরানকাঠি এলাকায় কাঁকড়া ধরতে যাওয়া এক মহিলা বাঘ দেখতে পান বলে দাবি করেন। খবর পেয়ে সেখানে যান বন দফতরের কর্মীরা। বাঘ বন্দি করতে খাঁচা পাতা হয়। বসে রাত পাহারা। তবে সকাল পর্যন্ত রয়্যাল বেঙ্গল ধরা পড়েনি। 


গরানকাঠির জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পিয়ালি নদী পেরিয়ে বাঘটি কাছের ডোঙাজোড়া গ্রামে ঢুকে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বন দফতরের কর্মীদের।  এই গ্রামেই রয়েছে পুরনো কেল্লা। শীতের মরশুমে পর্যটকদের যাতায়াত বেড়েছে। বাঘ কেল্লার আশেপাশে পৌঁছে গেছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। ফলে ঘুম উড়েছে প্রশাসনের।


মৈপীঠে বাঘ বেরোনোর পর এবার কুলতলিতে বাঘের দেখা মিলেছে বলে দাবি করেন এক মহিলা। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গতকাল কুলতলির গায়েনের চকে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়।এরই মধ্যে আজ সকালে গায়েনের চক থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে ৫ নম্বর গরানকাঠি এলাকায় কাঁকড়া ধরতে যাওয়া এক মহিলা বাঘ দেখতে পান বলে দাবি।খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। ঘটনাস্থলে কুলতলি থানার পুলিশ। 


মৎস্যজীবীরা (Fishermen) দাবি করেন, মাতলা নদী বাঁধ লাগোয়া গায়েনের চক এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেছে। একথা জানাজানি হতে, এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। গ্রামবাসীরা পুলিশ ও বন দফতরে খবর দেন।প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার করা হয়। আতঙ্কে মশাল জ্বালিয়ে রাত পাহারায় নামেন গ্রামবাসীরা।  বাঘ না অন্য কোনও পশুর পায়ের ছাপ?  তা খতিয়ে দেখে পুলিশ ও বন দফতর। খতিয়ে দেখে জানা যায়, ওই পায়ের ছাপ ডোরাকাটারই। এরপর তাকে দেখাও গিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় এক মহিলা। 


উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই বাঘ ঢুকে পড়েছিল কুলতলীরই  মৈপীঠের গ্রামে।   দিনভর উৎকণ্ঠার পর  অবশেষে খাঁচাবন্দি করা হয় রয়্যাল বেঙ্গলকে। বাঘকে খাঁচাবন্দি দেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন ভুবনেশ্বরীর গ্রামের  বাসিন্দারা।বাঘের দেখা পাওযার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দক্ষিণ রায়ের বাহনকে দেখতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠের ভুবনেশ্বরী গ্রামে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। ঘটনার দিন ভোরে একঝলক দেখা দিয়েই পাক ধান খেতের মধ্যে মিশে গিয়েছিল হলুদ-ডোরাকাটা শরীরটা।কয়েকজন গ্রামবাসীর কাছ থেকে বাঘের খবর পেয়েই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম। জল আর জঙ্গলে ঘেরা সুন্দরবনের এই লোকালয়ে রয়্যাল বেঙ্গলের উপস্থিতির কথা জানতে পেরেই তড়িঘড়ি চলে আসে বন দফতর ও পুলিশ।শুরু হয় বাঘকে বাগে আনার তোড়জোড়।পাতা হয় ফাঁদ। জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় ধানের খেত। অবশেষে খাঁচাবন্দি করা হয় বাঘটিকে।