জয়দীপ হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ ছিল। কেরোসিন তেলে ভেজাল মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে সুন্দরবন পুলিশ জেলার একটি বড় এলাকায়। এখন খোলাবাজারেই পাওয়া যায় কেরোসিন। সুন্দরবনের মতো এলাকায় বিভিন্ন কারণে এর চাহিদাও খুব বেশি। তার সুযোগেই ভেজাল তেল বিক্রি করে চড়া মুনাফা লোটার কারবার ফেঁদে বসেছিল একটি দুষ্কৃতী চক্র। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিল এর জাল। অবশেষে ওই চক্রে ধাক্কা দিল সুন্দরবন জেলা পুলিশ। অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হল বিপুল পরিমাণ ভেজাল কেরোসিন তেল (adulterated kerosene oil)। ঘটনাস্থল কাকদ্বীপের বনঘেরী এলাকা।


সুন্দরবন পুলিশ জেলার এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের (enforcement branch) তরফে অভিযান চালানো হয়। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে প্রথমে একটি এলাকায় চলে অভিযান। সেখান থেকে উদ্ধার হয় একাধিক ব্যারেল। মোট উদ্ধার হওয়া ভেজাল কেরোসিন তেলের পরিমাণ ১৬০০ লিটার। সেখান থেকেই খবর মেলে চক্রের আরও একটি গুদামের। সেখানেও অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। সেখান থেকে উদ্ধার হয় এর চেয়েও বেশি ব্যারেল। উদ্ধার হওয়া তেলের পরিমাণ ২০০০ লিটার। অর্থাৎ একই দিনে উদ্ধার হয়েছে মোট ৩৬০০ লিটার ভেজাল কেরোসিন তেল (adulterated kerosene oil)। গোটা ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দুই জনকে। ধৃতদের নাম রূপন দাস এবং অশোক করণ। ধৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে পুলিশের তরফে। কাকদ্বীপ আদালতে তোলা হলে আদালত ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।


কীভাবে তৈরি হয় এই ভেজাল কেরোসিন তেল? জানা গিয়েছে, কেরোসিনের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি হয় ভেজাল কেরোসিন তেল। মূলত ওই এলাকায় বিভিন্ন অটো-মোটরভ্যানের ব্য়বহার হয় এই তেল। এছাড়া, বিভিন্ন বোট ও ট্রলারে ব্যবহার করা হয় এই ভেজাল তেল।   


কাকদ্বীপের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ আসায় আগে থেকেই তদন্তে নেমেছিল পুলিশ। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে চলে অভিযান। তারপরেই মিলেছে সাফল্য। চক্রে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তার খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 
 
আরও পড়ুন: মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল কৃষকরা, তদন্তে প্রশাসন