জয়দীপ হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পূর্ণিমার ভরা কোটালের জলে বিপত্তি। ভাঙল কাকদ্বীপের ভুবননগরে কালনাগিনী নদীর বাঁধ। ধসে প্রায় দুশো ফুট এলাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নদীতে মিশে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। বাঁধ পাকা না হওয়ার কারণেই জলের ধাক্কায় ভেঙেছে বাঁধ। জল ঢুকছে লোকালয়ে। এলাকার পাশে বেশ কয়েকটি কাঁচা বাড়ি রয়েছে। আর তাতেই ছাদ হারানোর ভয় পাচ্ছেন বাসিন্দারা। 


স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধের সমস্যা দীর্ঘদিনের। আমফানের, ইয়াসের পর বাঁধ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর বর্ষা আসায় তা কার্যত ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। অথচ প্রশাসনের তরফে মেরামতির কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছেন স্থানীয়রাই। যদিও যত শীঘ্র সম্ভব স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের দাবি তুলেছেন তাঁরা। পাশাপাশি সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে পঞ্চায়েতও। 


ছবিটা বহু জায়গায় কার্যত একই। ভুটানে অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে ডুয়ার্সে হাতিনালার জল বেড়ে বিন্নাগুড়িতে ভেঙে গিয়েছে কালভার্ট। ফলে বেশকিছু যাতায়াতের পথ বন্ধ। গয়েরকাটার সঙ্গে বানারহাটের আপাতত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ঘুরপথে চলছে যানবাহন।


যদিও গত কয়েকদিন ধরে ভ্যাপসা গরম অব্যাহত কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায়। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, অস্বস্তি বাড়বে কলকাতায়। দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কমবে বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। 


তবে উত্তরবঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। দক্ষিণবঙ্গে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বাড়বে গরম ও আদ্রতাজনিত অস্বস্তি। এমনটাই পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দফতরের। মৌসুমী অক্ষরেখা রাজস্থান থেকে গোরখপুর ও পুর্ণিয়া হয়ে অসম পর্যন্ত বিস্তৃত। তার প্রভাবেই উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর।  উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। মেঘালয়ে হতে পারে প্রবল বৃষ্টিপাত। এছাড়াও সিকিম, বিহারেও রয়েছে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস।


কাল কলকাতার আকাশ আংশিক মেঘলা ছিল৷ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে হাওয়া অফিস৷ কোনও কোনও অঞ্চলে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বাধিক ৯০ শতাংশ, ন্যূনতম ৬১ শতাংশ৷


আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শক্তিশালী দক্ষিণা বায়ু কিংবা দক্ষিণ পশ্চিমা বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে যাচ্ছে একেবারে উত্তর-পূর্বে। এই সক্রিয়তা বজায় থাকবে আগামী ২৫ অগাস্ট অর্থাৎ পর্যন্ত। ২৬ অগাস্ট থেকে মৌসুমী অক্ষরেখা ফের দক্ষিণের দিকে যেতে শুরু করবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।          


আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এছাড়াও উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও বৃষ্টি সতকর্তা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাতেও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস। বাড়বে নদীর জল স্তর, নিচু এলাকা প্লাবনের আশঙ্কা। পাহাড়ি এলাকায় ধসের সম্ভাবনার সতর্কতা জারি হয়েছে৷