জয়ন্ত রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: মৃত ছেলেকে জীবিত ভেবে ২৪ ঘণ্টা আগলে রাখলেন মা। প্রতিবেশীদের দাবি, দশ বছর আগে ছোটছেলের মৃত্যুর পর আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন বছর ৫৮-এর ওই মহিলা। স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
মেঝেতে শুয়ে আছেন ছেলে। জল খাওয়াচ্ছেন মা। তবে, সেই জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে মেঝেতেই। রবিবার (Sunday) রাতে মহেশতলার (Maheshtala) চককেন্দুয়ার এই বাড়িতে ঢুকে এমনই ছবি দেখেছিলেন বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Pargana) মহেশতলা। মৃত ছেলেকে জীবিত ভেবে ২৪ ঘণ্টা আগলে রাখলেন মা।
মৃতের মা বলছেন, 'ছেলের শরীর খারাপ, তাই আজ অফিস যায়নি। ওর বন্ধু-বান্ধবরা হাসপাতালে নিয়ে গেল।' প্রতিবেশীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এই বাড়িতেই ভাড়া থাকেন বছর ৫৮-র বকুল সেনগুপ্ত ও তাঁর বড়ছেলে কৌশিক সেনগুপ্ত। স্বামীর মৃত্যুর পর আয়কর দফতরে চাকরি পান বকুল।
দশবছর আগে ছোটছেলের মৃত্যুর পর আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। রবিবার সকাল থেকে কোনও সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্দেহ হওয়ায় রাত ১০টা নাগাদ বাড়িতে ঢোকেন কয়েকজন।
আরও পড়ুন: Anish Death Case: এক মাসের মধ্যে আনিস খানের মৃত্যুর তদন্ত শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের
বছর ৩৯-এর কৌশিক সেনগুপ্তকে দেখেই বুঝতে পারেন মৃত্যু হয়েছে তাঁর কিন্তু, ছেলের যে মৃত্যু হয়েছে তেমনটা মানতে রাজি ছিলেন না মা। প্রতিবেশীরা খবর দেন স্থানীয় কাউন্সিলরকে। সোমবার সকালে এক চিকিৎসককে বাড়িতে আনার ব্যবস্থা করেন স্থানীয় কাউন্সিলর।
চিকিৎসক জানান, অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে কৌশিক সেনগুপ্তর। মহেশতলা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর মুকুল মণ্ডল জানান, আমি আমার উদ্যোগে ডাক্তার এনেছিলাম। শেষকৃত্যের ব্যবস্থা।
মৃতের প্রতিবেশী মহুয়া নস্কর জানিয়েছেন, ১০ বছর আগে ছোটছেলে মারা গেছে, অথচ বলে বাইরে আছে। স্বামী মারা গেছে বহু আগে তবু বলে এখানে থাকেন না।
শেষকৃত্যের জন্য ছেলেকে যখন শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখনও ষাট ছুঁইছুঁই একাকী বকুল সেনগুপ্তর দৃঢ় বিশ্বাস চিকিৎসার পরই ঘরে ফিরবে ছেলে।