রঞ্জিত হালদার, সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : কুকুরকে মারধর করায় এক্কেবারে ভেঙে পড়ছিলেন প্রেমিকা। প্রেমিককে ফোন করে কান্নাকাটিও করেছিলেন খুব। তাতেই স্থির থাকতে পারেননি আইআইটি পড়ুয়া প্রেমিক। চেন্নাই থেকে উড়ে এসে সোনারপুরে বাঁধিয়ে ফেললেন ধুন্ধুমার কাণ্ড। প্রাণঘাতী হামলা করে বসলেন প্রেমিকার কুকুরকে মারধর করায় অভিযুক্ত পরিবারের উপর। গ্রেফতারও হয়েছেন অভিযুক্ত। ঘটনাচক্রে আক্রান্ত পরিবারটি বিজেপি করে। গুরুতর জখম হয়েছেন বিজেপির পোলিং এজেন্ট এবং তাঁর স্ত্রী-ছেলে।


পুলিশ সূত্রে দাবি,  ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে।  দেবনাথ পরিবারের পোষা কুকুরকে নিয়ে বিবাদ বাঁধে পাশের অধিকারী বাড়ির সঙ্গে। অভিযোগ, অধিকারী পরিবারের লোকেরা দেবনাথ পরিবারের কুকুরকে মারধর করেন। তা নিয়ে অশান্তি চরমে ওঠে। মারপিটও হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগও জানানো হয়। 


পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে, তাঁদের নালিশ প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। তারপর রবিবার গ্রামে সালিশি সভা ডেকে দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করা হয়। এরই মধ্যে ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিয়ে নেয় দেবনাথ পরিবারের মেয়ে তাঁর প্রেমিককে বিষয়টি জানালে। 


প্রেমিকার কুকুরের ওপর হামলার প্রতিশোধ নিতেই চেন্নাই থেকে সোনারপুরে চলে আসে আইআইটি পড়ুয়া প্রেমিক। গভীর রাতে হামলা চালান অধিকারী পরিবারের সদস্যদের উপর।   রবিবার রাতে হেলমেট, রেনকোট চাপিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়ে বিজেপি কর্মী ও তাঁর স্ত্রী-ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। SSKM-এর ট্রমা কেয়ারে ভর্তি রয়েছেন আক্রান্ত বাবা-মা-ছেলে।


এই ঘটনায় চেন্নাই IIT-র পড়ুয়া অর্চন ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।   ধৃত অর্চন ভট্টাচার্য চেন্নাই IIT এর প্রথম বর্ষের ছাত্র। সোনারপুরেরই সুভাষগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র তিনি । অর্চনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল  স্মৃতি দেবনাথের। স্মৃতি সোনারপুর মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। প্রেমিক অর্চনকে অধিকারী পরিবারের লোকজনের খারাপ ব্যবহার করার বিষয়টি জানালে চেন্নাই থেকে তিনি চলে আসেন সোনারপুরে। 


জানা গিয়েছে, এলাকায়  আগে থেকেই যাতায়াত ছিল অর্চনের। ফলে তিনি এলাকা সম্পর্কে অনেকটাই জানতে। অর্চনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, তিনি গভীর রাতে এলাকায় আসেন। অধিকারীদের বাড়ি নির্মীয়মান। তাই বাড়িতে ঢোকার ক্ষেত্রে তাকে কোনও বাধা পেতে হয়নি। বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায় । এলোপাথাড়ি কোপ মারতে শুরু করে । পাশের ঘরে ছিলেন তাঁদের মেয়ে । তাঁর চিৎকারে চলে আসেন প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় সোনারপুর থানায়। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে বাঙুর ও পরে এসএসকেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 


আরও পড়ুন : 


"নমস্কার, কেমন আছেন সবাই...'' কীভাবে জনপ্রিয় 'প্রবাসে ঘরকন্না' শেয়ার করলেন মহুয়া