সন্দীপ সরকার ও জয়দীপ হালদার, কলকাতা : ' দুশ্চরিত্রের কথা বলে কাউন্সিলরের নির্দেশে মারধর করা হয়েছে, জরিমানা করা হয়েছে' বলতে বলতে গলা কেঁপে গেল মহিলার। আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট চোখে-মুখে।
ফের সমাজে নীতি পুলিশির শিকার এক মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবারে। অভিযোগের কাঠগড়ায় প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর। মহিলার চরিত্র খারাপ। এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছেন তিনি - এই অভিযোগ তুলে গৃহবধূকে মারধর ও জরিমানা করার অভিযোগ। রোষের হাত থেকে বাদ গেলেন না বধূর পরিবারের সদস্যরাও। উত্তর ভারতের খাপ পঞ্চায়েতের ছায়া এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে।
গৃহবধূর অভিযোগ, গত শুক্রবার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর কাকলি বরের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। ঘরের দরজা ভেঙে বের করে মহিলাকে পিলারে বেঁধে মারধর করা হয়। স্বামীকে দিয়ে মহিলাকে লাঠিপেটা করতেও বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। মাথা কামানোর চেষ্টা করা হয় মূক-বধির ছেলেকে দিয়ে। নিগৃহীতার আরও দাবি, এলাকায় দেখা গেলে মাথা মুড়িয়ে ঘোরানোর হুমকিও দেওয়া হয়।
এমনকী তাঁদের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযোগকারিণীর দাবি, আমাকে বেঁধে মারধর করে, স্বামী-মেয়েকেও মেরেছে, 'প্রতিবন্ধী ছেলেকে ব্লেড দেখিয়ে ভয় দেখিয়েছেন প্রতিবেশীরা। আমাকে দিয়ে জোর করে মুচলেকা লিখিয়েছে'
ঘটনার পরদিনই মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় চলে এসেছেন মহিলা। এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আতঙ্কে রয়েছে গোটা পরিবার। অন্যদিকে, সোমবার অভিযোগকারিণীর স্বামীকে ঘেরাও করেন এলাকাবাসী। কোনওক্রমে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। তালিবানি শাসনের ঘটনা সামনে আসতেই সব মহলে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
অভিযোগ অস্বীকার করে এলাকার পরিবেশ খারাপ করার জন্য মহিলাকেই দায়ী করেছেন প্রতিবেশীরা। ঘটনা প্রসঙ্গে প্রাক্তন কাউন্সিলর কাকলি বর জানিয়েছেন, তিনি এনিয়ে কিছু বলবেন না। এদিকে, কলকাতা থেকে স্পিড পোস্টে ডায়মন্ড হারবার থানায় অভিযোগ করেছেন নিগৃহীতা মহিলা। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার এসপি জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।