রঞ্জিত হালদার, ভাঙড় (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) : আন্দোলনকারীদের দাবি মতো, শুক্রবার প্রস্তাবিত হিমঘরের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করল প্রশাসন। আর তারপরই ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের নির্মীয়মাণ ডিস্ট্রিবিউশন স্টেশনের গেটের সামনে অবস্থান প্রত্যাহার করে নিল জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি। বিকেল পর্যন্ত তালা ঝুললেও, এদিন সন্ধে ৬টা নাগাদ, তালা খুলে দিলেন আন্দোলনকারীরা। 


পাওয়ার গ্রিড তরজা


২০১২ সালে ভাঙড়ের খামারআইটে জমি অধিগ্রহণ করার জন্য রাজ্য সরকারকে বলে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিডেট। সেই মতো ১৩ দশমিক চার চার একর জমি অধিগ্রহণ করে রাজ্য। ওই বছরই ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৫ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা কৃষকদের দেয় পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন,পাশাপাশি, আনুষঙ্গিক খরচের জন্য রাজ্য সরকারকে দেয় ৪ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা।


২০১৩ সালে বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যায়। কিন্তু, জমিদাতারা অভিযোগ তোলেন, কম দামে জমি দিতে তাদের বাধ্য করা হয়েছিল। তাকে ঘিরেই শুরু হয় আন্দোলন! ২০১৭-র ১৭ জানুয়ারি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির দাবি, প্রকল্প চালিয়ে নিয়ে যেতে ২০১৮ সালে তাদের একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তারই অন্যতম ছিল হিমঘর তৈরি। সেই হিমঘরের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ সময়মতো শুরু না হওয়াতেই শুরু হয় এবারের আন্দোলন। 


মিটল সমস্যা


সমস্যা মেটাতে বুধবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলাশাসক, বারুইপুরের মহকুমাশাসক, বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার ও অন্য আধিকারিকরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, হিমঘর তৈরির জন্য যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে, তা চার বিঘার একটু বেশি। মোট জমিদাতার সংখ্যা ৩৬।


তার মধ্যে এদিন ৮ জন জমিদাতাকে ডাকা হয় ভাঙড়ের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে। কিন্তু চারজন জমিদাতা আসেন। তাঁদের থেকে এদিন এক বিঘার একটু বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হয়। বদলে চেক তুলে দেওয়া হয় জমিদাতাদের হাতে। এরপরই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। 


প্রশাসন সূত্রে খবর, ১২ জুলাই, মঙ্গলবার জমিদাতাদের ডেকে বাকি জমি অধিগ্রহণ করা হবে। সূত্রের খবর, হিমঘর বাদে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়ন, বিদ্যাধরী নদীর সংস্কারের মতো ইস্যুগুলি নিয়েও শীঘ্রই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে জেলা প্রশাসন।


আরও পড়ুন- মদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু? বর্ধমানে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৪ জনের রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্য