কুলতলি: ফের কুলতলিতে ধর্ষণের অভিযোগ। পরিত্যক্ত বাড়িতে মূক ও বধির মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ। এই ঘটনায় নির্যাতিতার প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করেছে কুলতলি থানার পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মহিলা। তারপর বেশ কিছুক্ষণ তাঁর খোঁজ মেলেনি।এর পর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করেন বাড়ির লোকজন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। (Kultali News)


বিষয়টি জানাজানি হলে, স্থানীয়রাই অভিযুক্তকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে পুলিশ মহিলার ওই প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছেন কি না, তদন্ত করে দেখছে কুলতলি থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বাড়ি থেকে কাজে বেরিয়েছিলেন নির্যাতিতা। সেই থেকে আর খোঁজ মিলছিল না। পরে সন্ধেয় বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁকে। তাঁর বয়ান নিয়েছে পুলিশ। (South 24 Parganas News)


সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে মুখ খোলেন নির্যাতিতার পরিবারের এক সদস্য। তিনি বলেন, "ও পাগল। কথা বলতে পারে না। চিৎকার করছিল। এত দূর থেকে শুনতে পাইনি। খুঁজতে বেরিয়ে দেখি ওই ঘরে রয়েছে। খারাপ কাজ করেছে বলে মেনে নিয়েছে ও (অভিযুক্ত)। তার পর পুলিশকে ফোন করি। পুলিশ এসে নিয়ে গেল।" ওই মহিলা আরও জানান, বিষয়টি সামনে আসা নিয়ে তাঁদের তিরষ্কৃত হতে হয়।



নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। মুখ বন্ধ রাখতে দেওয়া হয় ২ লক্ষ টাকার টোপ। এমনকী, হাতে-পায়ে ধরে কেস মিটমাট করে নেওয়ারও প্রস্তাব দেন পঞ্চায়েত সদস্য। ওই পঞ্চায়েত সদস্যের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। নির্যাতিতার পরিবারের ওই সদস্যের বক্তব্য, "মেম্বাররা এসে আমাদের বলছে, তোমরা কেন হাইলাইট করলে এটা? এটা আমাদের মান-সম্মানের বিষয়। বসে মীমাংসা করে নেওয়া যেত। ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল। আমরা টাকা চাই না।"


পুজোর আগে, গত ৪ অক্টোবর, কুলতলির ৯ বছরের বালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে জয়নগরের মহিষমারি এলাকা। মহিষমারি ফাঁড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। মারধর করা হয় পুলিশকে। ওই ঘটনায় এক তরুণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার একমাসের মধ্যে এবার কুলতলিতে মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। 


পর পর নারী নির্যাতনের এমন ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে। দীপাবলি ঘিরে উৎসবের আমেজেও অন্ধকার নেমে এসেছে। আর জি কর কাণ্ডে দেশজুড়ে তোলপাড়ের পরেও বদলায়নি রাজ্যের ছবি। কুলতলি, ফরাক্কা, জয়গাঁও, কল্যাণী, বর্ধমান, আরামবাগ থেকে একের পর এক ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের খবর সামনে আসছে। কল্যাণীতে স্বামীর সামনে গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ সামনে এসেছে। বর্ধমানে প্রেমিককে আটকে রেখে প্রেমিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ। আরামবাগে দোকানের মধ্যেই এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয় বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। নারী নির্যাতন কোথায় গিয়ে থামবে, কী উপায় এই রোখার, উঠছে প্রশ্ন।