গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: অমাবস্যার কটালে আবারও সুন্দরবনের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মৌসুনি দ্বীপের মাটির বাঁধে বড়সড় ভাঙন (Mousuni Island Erosion) শুরু হয়েছে। রবিবার থেকে মৌসুনীর বালিয়াড়া ও সল্টঘেরি এলাকার বেহাল মাটির বাঁধ ঢেউয়ের দাপটে ভাঙতে শুরু করেছে। যা নিয়ে আশঙ্কায় দিন কাটছে উপকূলের বাসিন্দাদের। 

মাটির বাঁধে বড়সড় ভাঙন : দিন, মাস, বছর কেটে গেলেও বদল হয় না ছবিটার। ফের মৌসুনি দ্বীপের মাটির বাঁধে বড়সড় ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুদিন ধরে এই পরিস্থিতিতে শঙ্কায় উপকূলের বাসিন্দারা। প্রায় ৪০০ ফুট এলাকাজুড়ে ভেঙেছে বাঁধ। বেহাল বাঁধ উপচে নোনা জল ঢুকছে পাশের লোকালয়ে। বাঁধ লাগোয়া প্রায় ৩০০টি পরিবারের বাস। ঝড়- বৃষ্টিতে আতঙ্কে ভোগেন উপকূলের বাসিন্দারা। এর পাশাপাশি এই ভাঙনের জেরে দ্বীপের পঞ্চাশটির বেশী ট্যুরিস্ট কটেজ ভাঙনের কবলে। আতঙ্কিত কটেজ মালিকরা।এখনই স্থায়ী বাঁধ তৈরী না হলে বর্ষায় তলিয়ে যাবে বিস্তৃর্ণ এলাকা। পাকা ও স্থায়ী বাঁধের দাবি তুলেছেন এলাকার বাসিন্দাদের। নামখানা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত ভাঙন এলাকায় মেরামতির কাজ শুরু হবে।

বর্ষা আসতে এখনও দু' মাসের বেশি বাকি। এইসময় নদী ও সমুদ্র তুলনায় শান্ত থাকে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সুন্দরবন উপকূলে  ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০কিমি বেগে দমকা বাতাস বইছে। যার ফলে উত্তাল নদী ও সমুদ্র। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে। সুন্দরবনের অন্যতম বিছিন্ন দ্বীপ মৌসুনি। নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা। বরাবর এই এলাকায় জলস্তর বৃদ্ধির পরিমাণ সুন্দরবনের অন্য অংশের তুলনায় বেশি। এবার রবিবার থেকে কোটালের জেরে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ। সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে বড় বড় ঢেউ। সেই ঢেউ আছড়ে পড়ছে বাঁধে। যার ফলে দুর্বল বাঁধ দ্রুত ভাঙছে। বাঁধ উপচে নোনা জল ঢুকছে লোকালয়ে। বাঁধের উল্টোদিকে থাকা বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কিত।

দক্ষিণবঙ্গে দুর্যোগের আশঙ্কা: চলতি সপ্তাহের শুক্রবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে উপকূলবর্তী জেলায়। জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগে দমকা বাতাস বইতে পারে। ঝড় বৃষ্টির পরিমাণ বুধবার বেশি থাকবে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। বৃহস্পতিবার ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টির পূর্বভাস জারি করা হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই। মূলত উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে প্রবল ঝড় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় বৃষ্টির সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা বাতাসের পূর্বভাস উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হুগলি জেলায়।