শান্তনু নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনের (Sundarbans) ঝিলার জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় নিখোঁজ এক মৎসজীবী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের লাহিড়ী পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরঘেরি গ্রাম থেকে সুন্দরবনের ঝিলা ৫নং জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় নিখোঁজ হলেন শিবপদ সরকার নামে বছর পঞ্চান্নর এক মৎসজীবী (Fisherman)।
পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোর নাগাদ স্ত্রী রিনা সরকার ও স্থানীয় শশাঙ্ক মন্ডল নামে এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে চরঘেরি গ্রাম থেকে শিবপদ সরকার কাঁকড়া ধরতে ঝিলা ৫নং জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে যায়।আজ সকাল সাতটা নাগাদ যখন তাঁরা কাঁকড়া ধরছিল ঝিলা ৫নং জঙ্গলের নদীতে,তখন হঠাৎ একটি বাঘ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে তাঁদের নৌকার উপর আছড়ে পড়ে শিবপদ সরকারকে তুলে নিয়ে জঙ্গলের মধ্যে চলে যায়।সঙ্গে থাকা তাঁর স্ত্রী ও সঙ্গী পিছনে বেশ কিছুটা ধাওয়া করলেও শেষমেশ বাঘ শিবপদকে নিয়ে গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়লে তাঁরা গ্রামে ফিরে এসে খবর দেয়।খবর দেওয়া হয় বন দফতরকে ।ঘটনার খবর পেয়ে নিখোঁজ মৎসজীবীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বন দফতর।সুন্দরবন ব্র্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা তাপস মন্ডল জানান,' দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি।নিখোঁজ মৎসজীবীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।তবে যাঁরা মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন তাঁদের কোন বৈধ কাগজপত্র ছিল না।'
আরও পড়ুন, বগটুই গণহত্যা মামলায় সিবিআই-র জালে আরও ৭
প্রসঙ্গত, একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে সুন্দরবনে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন মৎসজীবীরা। কখনও লুকিয়ে বন দফতরের নিষেধ অমান্য করে গভীর জঙ্গলে পেটের জ্বালায়, কখনও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রোজগারের আশায় পাড়ি দেয় মৎসজীবীদের দল। আর সেটাই কাল হয়ে যায় মৎসজীবীদের জন্য। তবে অনেকক্ষেত্রে এমন ঘটনাও ঘটে, যে বাঘের হামলার পরে এমন অনেকসময়ই আসে, যেখানে দেহর হদিশ পায় না পরিবার। সেক্ষেত্রে মৃত্যু হয়েছে কি হয়নি, যেমন বোঝা দায় হয়ে ওঠে, তেমনই মৎসজীবীর পরিবারের জীবন জর্জরিত হয়ে ওঠে। তবে এই বাইশ সালের বুকেই একাধিক বাঘের হামলা ঘটেছে। যেখানে কাঁকড়া শিকার করতে গিয়ে মাঝ নদীতে ডিঙি নৌকার উপর আক্রমণ করেছে বাঘ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সঙ্গীরা নৌকার বৈঠা নিয়েও পাল্টা আক্রমণ করার ঘটনা ঘটেছে। বাঘ সেই মুহূর্তে পালিয়ে গেলেও প্রথম আক্রমণে এতটাই ঘায়েল হয়ে যায়, আক্রান্ত মৎসজীবী যে, প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তবে এখনও আশার উপর ভর করেই এগিয়ে চলছে আক্রান্তের পরিবার।