গৌতম মন্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দিল্লির (Delhi) শ্রদ্ধা-কাণ্ডের ছায়া এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে (South 24 Parganas Murder Case)। সন্দেহের বশে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর দেহ লোপাটের জন্য তিন টুকরো করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। স্ত্রীকে খুনের পর দেহ লোপাটের জন্য কাটারি দিয়ে দেহ তিন টুকরো করে স্বামী। অভিযুক্ত স্বামী আলিম সেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Police)।
নিহত ৩৫ বছরের মমতাজ বিবি। আজ বিকেলে বিষ্ণপুরের সারদা গার্ডেন এলাকার একটি জলার পাড়ের মাটির ভেতর থেকে দেহের টুকরোগুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিকল্পনা করে এই খুন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই খুনে আলিম ছাড়া আর কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বছর পনেরো আগে আলিমের সঙ্গে মমতাজের বিয়ে হয়। আলিম মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ি বিষ্ণুপুরের ছিটবাগি এলাকায় থাকত দম্পতি। মমতাজ সামালি এলাকায় একটি লজেন্স কারখানায় কাজ করতেন।
মঙ্গলবার সকালে কাজে যাওয়ার জন্য স্বামীর সঙ্গে বেরিয়েছিলেন মমতাজ। তারপর থেকে আর ফেরেন নি। আলিম যথারীতি রাতে শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসে। আজ সকালে এলাকার মানুষের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে জানায় বিষয়টি। এরপর আলিমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। একসময় জেরার মুখে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় আলিম। বিকেলে আলিমকে সঙ্গে নিয়ে মাটি খুঁড়ে দেহের টুকরোগুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গতবছর এমনই এক নৃশংস ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। যা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। প্রথমে খুন। তারপর দেহকে ৩৫ টুকরো করা। তারপরও পরিচয় যাতে বোঝা না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারের (Shraddha Walkar) মুখ আগুনে পুড়িয়েছিল আফতাব আমিন পুনাওয়ালা (Aftab Ameen Poonawala) ।ফ্রিজ কিনে এনে প্রেমিকার খণ্ড-বিখণ্ড দেহ তাতে ঢুকিয়ে রেখে তারপর রোজ রাতে চলত সেগুলো জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার কাজ। দিল্লি খুন-কাণ্ডে নৃশংসা দেখে শিউরে উঠছিল গোটা দেশ। দিল্লি পুলিশ সূত্রে এর মাঝেই উঠে এসেছিল নতুন তথ্য। প্রেমিকার পরিচয় যাতে বোঝা না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে খুনের পর দেহ কুচি-কুচি কেটে ফেলে শ্রদ্ধার মুখ পুড়িয়ে দিয়েছিল আফতাব।
আরও পড়ুন, মানিকের স্ত্রী-পুত্রের জামিনের আর্জি খারিজ, ফের হাজতবাস
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, 'মুম্বইয়ে এক ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ হয় দুই জনের। তিন বছর ধরে তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন এবং দিল্লিতে এসে থাকতে শুরু করেন। দিল্লিতে চলে আসার পরই শ্রদ্ধা ওই যুবককে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন।' পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছিল যে 'দুইজনের মধ্যে প্রায়ই বিয়ে নিয়ে সমস্যা হত এবং তা নিয়ন্ত্রণের বাইরেও চলে যেত। ১৮ মে-র এই নির্দিষ্ট ঘটনায় নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল যুবক। অভিযুক্ত জানিয়েছিল যে সে প্রেমিকার দেহ টুকরো করে এবং আশেপাশে ছত্রপুর এনক্লেভের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় তা ফেলে দিয়ে আসে।'