দক্ষিণ ২৪ পরগনা: জামালকে নিয়েই ভোররাতে সোনারপুরের 'প্রাসাদে' অভিযানে পুলিশ। সোনারপুরের দাপুটে তৃণমূলকর্মী জামালউদ্দিন সর্দার ওরফে জামালকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাল পুলিশ। বাড়ি সংলগ্ন যে জায়গায় সালিশি সভা বসাতো জামাল, যেখানে শিকল বেঁধে নির্মম অত্য়াচারের অভিযোগ উঠেছে, সেই সব জায়গায় এদিন তল্লাশি অভিযান চলে। মাটির নীচে জলের রিজার্ভারের তালা ভাঙা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, জামালের বাড়ি থেকে সিসিটিভির হার্ডডিস্ক সহ বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। 


পুলিশের নজর এড়াতে মুখ ঢেকেছিলেন মাস্কে,আর সেই মাস্কই কাল হল।অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন সোনারপুরের তৃণমূল কর্মী জামালউদ্দিন সর্দার ওরফে জামাল।শুক্রবার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার শামুকপোতা থেকে জামালউদ্দিনকে গ্রেফতার করে সোনারপুর থানার পুলিশ এবং বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। পুলিশ সূত্রে দাবি,মঙ্গলবার সোনারপুরের বাড়ি থেকে পালিয়ে জামাল চলে যান ঘুটিয়ারি শরিফে শ্বশুরবাড়িতে। যদিও সেখানে না থেকে রাতভর একটি বাঁশবাগানে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। বুধবার সকালে ঘুটিয়ারি শরিফ থেকে ট্রেন ধরে বিধাননগর হয়ে বাগুইআটিতে আসেন জামাল। সেদিনই ফের সোনারপুরের মিলনপল্লিতে এক পরিচিতর বাড়িতে আশ্রয় নেন তিনি। 


একদিন সেখানে কাটিয়ে, বৃহস্পতিবার ফের জায়গা বদল করেন জামাল।হুগলির ডানকুনি হয়ে এসে ওঠেন কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার বৈরামপুরে।নিখোঁজ থাকার ৩ দিন পর, জামালউদ্দিনের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন দেখে, নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার শামুকপোতা থেকে জামালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি, কলকাতার ফ্ল্যাটে গা ঢাকা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল সালিশি-অত্যাচারে অভিযুক্ত সোনারপুরের তৃণমূল কর্মীর। পুলিশ সূত্রে দাবি, পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে মাস ছয়েকের জন্য দূরে কোথাও আত্মগোপনের পরিকল্পনা ছিল জামালের। তার জন্য নতুন মোবাইল ফোন কেনার পাশাপাশি নিজের ফোন নম্বর পরিবর্তন করতে কিনেছিলেন নতুন সিমও। কিন্তু এরমধ্যেই এক পরিচিতের ফোন থেকে শাশুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজের বিপদ বাড়ান সোনারপুরের তৃণমূল কর্মী।


আরও পড়ুন, নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাবেন মুখ্যমন্ত্রী?


পুলিশ-প্রশাসন, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকদের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল জামালউদ্দিন সর্দারের। তৃণমূলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন বেআইনি কাজকর্ম চালাতেন জামাল। আমাকে গাড়ি চাপা দিয়ে মারতে ৩ লক্ষ টাকা সুপারি দেয় একজনকে। এমনকী, আমার ছেলে-মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা হয়েছিল। পুলিশকে জানিয়েও কাজ হয়নি। সোনারপুরের জামালউদ্দিন সর্দার গ্রেফতার হওয়ার পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন প্রতাপনগরের বাসিন্দা সমীর নস্কর।তাঁর অভিযোগ, একুশের বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিন, ২ মে বিজেপি কর্মী হারাণ অধিকারী খুন হন। খুনের ঘটনাতেও যুক্ত ছিলেন জামাল। এই সমস্ত কাজের প্রতিবাদ করাতেই তিনি জামালের রোষের মুখে পড়েন বলে দাবি করেছেন সমীর নস্কর। এর আগে জামাল দাবি করেন, এই সমীরই তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছেন। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।