শান্তনু নস্কর, সন্দীপ সরকার ও করুণাময় সিংহ: দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার মঙ্গলচন্দ্র বিদ্যাপীঠ হাইস্কুল...আদালতের নির্দেশে, এখানকার ৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্য়ে ৮ জনেরই চাকরি চলে গেছে। স্কুলের পড়ুয়া সংখ্য়া ৯০০-র বেশি। কীভাবে পঠনপাঠন চলবে, মাথায় হাত পড়েছে কর্তৃপক্ষের। অন্য়দিকে, মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের একটি স্কুলে ৫ জন অঙ্কের শিক্ষিকারই চাকরি চলে গেছে। এবার, কে অঙ্ক শেখাবেন, কীভাবে ক্লাস চলবে, ভেবে পাচ্ছেন না প্রধান শিক্ষিকা।

আরও পড়ুন, SSC ভবনের সামনে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অনশনে চাকরিহারারা, রাতেও গেলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, 'অবস্থান হোক, কিন্তু..'

 কোনও স্কুলে, ৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্য়ে ৮ জনেরই চাকরি চলে গেছে! কোথাও আবার, অঙ্কের ৫ জন শিক্ষক, প্রত্য়েকেই চাকরি হারিয়েছেন। কীভাবে চলবে স্কুলগুলো? দিশেহারা অবস্থা প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। কীভাবে ক্লাস হবে... কীভাবে সিলেবাস শেষ হবে ভাবতে পারছেন না তাঁরা। যেমন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার ছোট মোল্লাখালির মঙ্গলচন্দ্র বিদ্যাপীঠ হাইস্কুল। স্কুলে মোট ৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, চাকরি হারিয়েছেন ৮ জন। স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্য়া ৯০০-র বেশি। এই পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন কার্যত বন্ধ হওয়ার জোগাড়। 

মঙ্গলচন্দ্র বিদ্যাপীঠ হাইস্কুল পরিচালন সমিতি প্রেসিডেন্ট  স্বপনকুমার রায় বলেন, ৯ জনের মধ্য়ে ৮ জন চাকরিহারা হন। আগামীদিনে এই স্কুল কীভাবে চলবে, কীভাবে পঠনপাঠন শুরু করব,এটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের বাণীচাঁদ আগরওয়াল বালিকা বিদ্য়ালয়। মোট শিক্ষিকার সংখ্য়া ৪০ জন।তার মধ্য়ে চাকরি হারিয়েছেন ১৬ জন। এই ১৬ জনের মধ্য়ে ৫ জন অঙ্কের শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁদের চাকরি চলে যাওয়ায়, বর্তমানে, স্কুলে অঙ্কের শিক্ষকের সংখ্য়া শূন্য়। অর্থাৎ, এই স্কুলে অঙ্ক শেখানোর আর কোনও শিক্ষিকা রইলেন না। ফাঁকা ক্লাস, অঙ্কের টিচার নেই। 

 গত সোমবার, নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্য়মন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে, চাকরিহারাদের ভলান্টারি সার্ভিসের প্রস্তাব দেওয়া হয়। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, 'ভলান্টারি সার্ভিস কিন্তু সবাই দিতে পারে। যাতে আবার চাকরি ফিরে পান, তার ব্যবস্থা প্রসেসের মধ্যে দিয়েই ২ মাসের মধ্যেই শেষ হবে এবং আপনাদের চাকরি ব্রেক হবে না।' এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন চাকরিহারা একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা। চাকরিহারা  সুদীপ্তা আইচ বলেন, আমি যোগ্য়তার প্রমাণ দিতে ভয় পাই না। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবক? ভলান্টিয়ার হিসেবে চাকরি করা, সেটা মানতে পারব না। সম্ভব না। আমরা বিচার চাই। যোগ্য় অযোগ্য় সব এক হয়ে যাচ্ছে। এ তো অন্য়ায়। ভবিষ্য়ৎ এখন সরু সুতোয় ঝুলছে কী হবে? কীভাবে চলবে সংসার? অসহায় মুখগুলোয় একরাশ প্রশ্ন।