রঞ্জিত হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বউবাজারের পর এ বার বাড়িতে ফাটল ঘিরে আতঙ্ক সোনারপুরেও (Sonarpur News)। সেখানে একটি বিদ্যালয়-সহ একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছে বলে জানা গিয়েছে। এর জন্য এলাকায় একিট বহুতলের নির্মাণকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়রা (High Rise Construction)। গোটা ঘটনায় পুরসভা এবং নগরোন্নয়ন বিভাগের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। 


বউবাজারের পর সোনারপুরে একাধিক বাড়িতে ফাটল


রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত চৌহাটির ঘটনা। এলাকায় একটি বহুতলের নির্মাণ হচ্ছে। তার জেরেই একাধিক বাডি় এবং এলাকার একমাত্র স্কুলটিতে ফাটল ধরেছে বলে অভিযোগ। তাতে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা (House Cracks)।


স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকার্যে মেশিন চালু করা হলেই বাডি় কাঁপতে শুরু করে তাঁদের। খাটে শুয়ে থাকলেও কাঁপুনি অনুভূত হয়। তার জেরে শরীরে নানা সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। এ নিয়ে নির্মীয়মান ওই বহুতলের কর্মীদের কাছে গিয়েও অভিযোগও জানিয়েছেন তাঁরা। লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে পুরসভায়। তার পরও সমাধান হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের। 


এ ব্যাপারে এলাকার কাউন্সিলর রাজীব পুরোহিত বলেন, "আমার কাছে যখন খবর আসে, নির্মীয়মান সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্তের সাথে কথা বলি আমি।  বিষয়টি দেখার জন্য বলি। কিন্তু সংস্থার কর্তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে বসতে চাইলেও, স্থানীয়রা তাতে রাজি হননি।’’ কাউন্সিলরের দাবি, সংস্থার পক্ষ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সোনারপুর থানার আইসি কয়েক জন ক্ষতিগ্রস্তকে ডাকেন এবং সকলকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের ওই নির্মাণকারী সংস্থা ক্ষতিপূরণ দেবেন বলে সেখানে আশ্বস্ত করেন আইসি। স্থানীয় বাসিন্দারা তা মেনেও নেন বলে দাবি ওই কাউন্সিলরের। 


আরও পড়ুন: Malda News: মালদায় তৃণমূল কর্মীকে অপহরণের অভিযোগ, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের জের! তদন্তে পুলিশ


কিন্তু সোনারপুরের বাসিন্দা তথা সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বলেন, "চৌহাটি এলাকায় বেসরকারি সংস্থাগুলি হাঙরের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে।  আশেপাশের বাড়িতে ফাটল ধরছে ,অথচ কারও হেলদোল নেই। যাঁদের বাড়ি ফাটল ধরছে, তাঁদের পাশে কি কেউ দাঁড়াবে না?" পুরসভা এবং নগরোন্নয়ন বিভাগের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। পুলিশের ভুমিকার সমালোচনা করে সুজন বলেন, "টাকার বিনিময়ে রফা করে দেওয়াই কি কাজ পুলিশের? আশেপাশের মানুষের বিপদের কথা না ভেবেই কোটি কোটি টাকার রফা চলছে। পুলিশের কাজ ব্যবস্থা নেওয়া, সালিশি করা নয়।"


প্রশ্নের মুখে পুরসভা এবং নগরোন্নয়ন দফতর


এ নিয়ে নির্মীয়মান সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা দু’-একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ঘুরে দেখলেও, কোনও কথা বলতে চাননি। রাজপুর সোনারপুর পুরসভার প্রধান পল্লব দাস জানান, তাঁরা এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। তার পর এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গোটা ঘটনায় বিজেপি পুরসভা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে।