কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : পুরভোটের (Municipal Election) মনোনয়ন জমা করার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশ অমান্য করার জের। তৃণমূলের (TMC) দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অরূপ বিশ্বাসকে (Arup Biswas)। পুরভোটের মনোনয়ন জমা করার শেষ দিনে যে দায়িত্বে বসানো হয়েছে কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) ও সওকত মোল্লাকে। প্রসঙ্গত, ঘাসফুল শিবিরের যে দুই নেতাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত। পাশাপাশি দলের তালিকা ব্যতিত যারা মনোনয়ন (Nomination) জমা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও বার্তা দেওয়া হল শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তালিকা-বিভ্রাটের পর স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা অমান্য করেই যে সমস্ত নেতারা মনোনয়ন জমা করেছেন, তাঁদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি। প্রকাশ্যে চলে আসা দলের শীর্ষনেতৃত্বের অন্তর্কলহ দমনের বার্তা জানান দিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ট দুই নেতাকে দেওয়া হল দায়িত্ব। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একাধিক জায়গায় যেভাবে প্রথম তালিকা অনুযায়ী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তৃণমূলের অনেকে, তাতে রীতিমতো অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। তাই পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সীর সঙ্গে আলোচনার পর খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কো-অর্ডিনেটর বদলের সিদ্ধান্তে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।
পাশাপাশি নেত্রীর নির্দেশ কীভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে, তা জানতে জেলা থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। আজ বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন, আগামীকাল স্ক্রুটিনি ও শুক্রবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। সেদিন পর্যন্ত দেখে নির্দল হিসেবে বা প্রথম তালিকা ধরে কারা কারা মনোনয়ন দিয়ে তা প্রত্যাহার করেননি সেদিকে নজর রেখে বিস্তারিত তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। যার ভিত্তিতে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
যাবতীয় বিবাদ-বিতর্ক শুরু হয়েছিল তৃণমূলের বিভিন্ন সোশাল হ্যান্ডেলে প্রকাশিত প্রার্থী তালিকা থেকে, পরে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, সোশালে প্রকাশিত তালিকা নয়, তাঁর ও সুব্রত বক্সীর সই করা তালিকায় চূড়ান্ত। স্বয়ং তৃণমূলনেত্রী নিজেও সে কথা জানান। কিন্তু দ্বিতীয় তালিকায় নাম না থাকা অনেকেই প্রথম তালিকার ভিত্তিতে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। যার পর থেকেই প্রকাশ্যে ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষস্তরের দ্বন্দ্ব। সেই প্রেক্ষিতেই অভিষেক ঘনিষ্টদের সম্বন্বয়ের দায়িত্ব দিয়ে গোটা বিষয়টা সামলাতে শীর্ষ নেতৃত্ব উদ্যোগী হল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে শাসকদলকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা।
আরও পড়ুন- তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন শুভেন্দু, কুণালের দাবি ঘিরে শোরগোল