শান্তনু নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: তৃণমূলের (TMC) 'চলো গ্রামে যাই' (Chalo Grame Jai)কর্মসূচি ঘিরে বাসন্তীতে (Basanti News) উত্তেজনা। বিধায়কের সামনেই অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বে বিক্ষোভ। স্থানীয় নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে বহিরাগতদের নিয়ে দলীয় কর্মসূচি পালনের অভিযোগ উঠল বিধায়কের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওড়ালেন বিধায়ক। এ নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি (BJP)।
বাসন্তীতে তৃণমূলের 'চলো গ্রামে যাই' কর্মসূচি ঘিরে অশান্তি
শনিবার এই 'চলো গ্রামে যাই' কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান সমর্থকরা। অঞ্চল সভাপতি কানাই নস্কর বিধায়কে প্রশ্ন করেন, "আমাদের কী অ্যাভয়েড করে করবেন?" জবাবে শ্যামল বলেন, "পরে কথা বলব তোর সঙ্গে।" নাছোড়বান্দা কানাি বলেন, "না, না, পরে কথা নয়।" বিধায়ক বলেন, "ওখানে বলিস।"
কিন্তু তাতেও দমেননি শ্যামল। তিনি বলেন, "আজকে এইটার আপনাকে উত্তর দিতে হবে। উত্তর দিয়ে আপনাকে যেতে হবে। আপনারা বারবার একটা জিনিস করছেন কেন? আমাদের বিরোধ করতে এসেছেন কেন? এইটাই বলুন।" এর পাল্টা বিধায়ক বলেন, "তোর এগেনস্টে কমপ্লেন আছে।" শ্যামল বলেন, "কী কমপ্লেন আছে? সামনাসামনি বলুন। কমপ্লেন কোথায় আছে? সামনাসামনি বলুন। না, ওই গল্প শুনব না।" তাতে বিধায়ক বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সরে যেতে বলেন। কিন্তু শ্যামল বলেন, " পার্টি আছে। প্রমাণ দেখাতে হবে। কোনও কথা হবে না।"
আরও পড়ুন: Ananta Roy: লোকসভা নির্বাচনের আগেই 'বঙ্গভঙ্গ'! এ বার ডেডলাইন বেঁধে দিলেন অনন্ত
ফলে দলীয় কর্মসূচিতে খোদ বিধায়ককেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বসলেন অঞ্চল সভাপতি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের বিবাদ। বিধায়ককে ঘিরে অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বে চলল বিক্ষোভ।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলে হতে পারে পঞ্চায়েত নির্বচন (Panchayat Election 2023)। তার আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে তৃণমূলের 'চলো গ্রামে যাই' কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা।
অঞ্চল সভাপতির অভিযোগ, স্থানীয় নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে বহিরাগতদের নিয়ে এই কর্মসূচি পালন করছেন বিধায়ক। এক মহিলা তৃণমূলকর্মী বলেন, "আপনি দুটো রেপ কেসের আসামিকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।" বিধায়কের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতীদের মদত দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন মহিলা তৃণমূল কর্মী।
উত্তর মোকামবেড়িয়া, বাসন্তীর অঞ্চল সভাপতি বলেন, "আমাদের জানানো হয়নি...বহিরাগতদের এনে প্রোগ্রাম করছিলেন...তাই বিক্ষোভ...উনি বিধায়ক হওয়ার পর থেকে এখানকার কিছু লোককে নিয়ে গোষ্ঠী তৈরি করছেন যেটার জন্য আগামী দিনে অশান্তি হতে পারে।" তৃণমূল কর্মী মনীষা ঘরামি বলেন, "আমরা এখানে দল করি...বুথে বুথে নেতৃত্ব দিই অথচ উনি সবাইকে বাদ দিয়ে এটা করছেন।" বিধায়ক বিভাজনের রাজনীতি করছেন বলেও অভিযোগ তোলেন।
বিধায়কের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ
তবে অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিধায়ক। শ্যামল বলেন, "গোষ্ঠী কিছু নেই...স্থানীয়দের নিয়েই করা হয়েছে...এক-দু’ জন ছিল না...অঞ্চলভিত্তিক হলে সবাইকে ডাকা হবে।"
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের ঘরোয়া বিবাদ প্রকাশ্যে আসতেই কটাক্ষ করেছে বিজেপি। জয়নগর সাংগঠনিক জেলা সধারণ সম্পাদক বিকাশ তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই সংঘাত নিয়ে অস্বস্তিতে তৃণমূল। আর শাসকদলের বিরুদ্ধে এটাকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি।