মুন্না আগরওয়াল, গঙ্গারামপুর (দক্ষিণ দিনাজপুর) : দণ্ডি কেটে বিজেপি ছেড়ে তিন মহিলার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার রাজনীতিতে কম শোরগোল হয়নি। এবার ভরা মিটিংয়ে বিজেপির এক মহিলা কর্মীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল দলেরই নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের বিজেপি কার্যালয়ে।


দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন গঙ্গারামপুরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বেলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা কানাই বিশ্বাস। রবিবার রাতে গঙ্গারামপুরের কালীতলায় দলীয় কার্যালয়ে একটি মিটিং চলছিল। অভিযোগ, সেখানেই হঠাৎ বিজেপির এক মহিলা কর্মীকে ঘরে আটকে মারধর করেন দলীয় নেতা কানাই বিশ্বাস। যার বেশ কিছুক্ষণ পর বিজেপির অন্যান্য কর্মীরা ওই মহিলাকে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। 


এই ঘটনায় দু’জনের বিরুদ্ধেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। 
 
চলতি বছরেই এপ্রিল মাসে দলবদলের অভিনব ছবি দেখা গিয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের (South Dinajpur) তপনে। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। বিজেপিতে (BJP) যোগদানকারীরা তৃণমূলে (TMC) ফেরেন দণ্ডি কেটে। দণ্ডি কেটে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরেন তিন মহিলা। এই তিনজন তপনের গোফানগরে বিজেপিতে যোগদান করেন। গেরুয়া শিবিরের দাবি, সেখানে প্রায় ২০০ মহিলা বিজেপিতে যোগদান করেন। 


বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় ওই মহিলাদের রাস্তায় দণ্ডি কাটিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করানোর অভিযোগ ওঠে। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের এই ঘটনায় তৃণমূলকে নিশানা করেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি রাজ্য সভাপতি ট্যুইট করেন, তপনের গোফানগরের ওই মহিলারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। একদিনের মধ্যে ওই আদিবাসী মহিলাদের ভয় দেখিয়ে তৃণমূলের গুন্ডারা দলে ফিরতে বাধ্য করেছে। শাস্তি হিসেবে ওই মহিলাদের দিয়ে দণ্ডি কাটানো হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের অপমান করার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে গর্জে ওঠার ডাক দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। 


যদিও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ্তা চক্রবর্তী দাবি করেন, '২০০ জন নয়, তার থেকে অনেক কম সংখ্যক মহিলা গতকাল যোগদান করেছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ মহিলাই ভুল বুঝতে পেরে আবার তৃণমূলে ফিরতে চাইছে। এদের মধ্যে কয়েকজন মহিলা বিবেকের দংশনে  ঘুমোতে না পেরে দণ্ডি কেটে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করলেন। আগামী দিনে বাকি মহিলারাও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করবেন। রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তাঁদের আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে', বলে জেলা মহিলা তৃণমূল নেত্রী জানান।