সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: রাজ্য় সরকারের (State Govt) বিরুদ্ধে হাউস ফর অল স্কিমের টাকা না ফেরানোর অভিযোগ। কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল কংগ্রেস পরিচালিত পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভা (Jhalda Municipality)। পুর চেয়ারম্য়ানের অভিযোগ, অনাস্থা নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে ২কোটি ৮০ লক্ষ টাকা নিয়ে নেওয়া হলেও ফেরানো হয়নি। এনিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।  


ঝালদা পুরসভার বোর্ড গঠন ঘিরে টানাপোড়েন দেখেছেন পুরুলিয়াবাসী। অনাস্থা নিয়ে জল গড়ায় আদালতে। এবার রাজ্য় সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল কংগ্রেস পরিচালিত পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভা। অভিযোগ বোর্ড গঠন নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে হাউস ফর অল স্কিমের টাকা নিয়ে নেওয়া হলেও পরে তা ফেরানো হয়নি। ঝালদা পুরসভা সূত্রে খবর, ওই প্রকল্পে পুরসভার অ্য়াকাউন্টে ছিল ২কোটি ৮০লক্ষ টাকা। গত বছরের ১৩ মার্চ খুন হন ঝালদার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। 


 নির্দল প্রার্থী, শীলা চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল।নির্দল থেকে তৃণমূলে যোগ দিলেও, কিছুদিনের মধ্য়েই দল ছাড়েন শীলা চট্টোপাধ্যায়। ৫ জন কংগ্রেস কাউন্সিলর ও ২ নির্দল কাউন্সিলর মিলে তৃণমূলের পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। ঝালদা পুরসভায় আস্থা ভোটে হেরে যায় তৃণমূল। কংগ্রেসের বোর্ড গঠন যখন প্রায় নিশ্চিত, তখন তৃণমূল কাউন্সিলর জবা মাছোয়ারকে মনোনীত চেয়ারম্যান হিসেবে বসানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার। হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায় রাজ্য়ের বিজ্ঞপ্তি। আস্থা ভোটে ঝালদা পুরসভা দখল করে কংগ্রেস। এই টানাপোড়েনের জেরে রাজ্য় সরকার হাউস ফর অল স্কিমের টাকা ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু, সেই টাকা বোর্ড গঠনের পরেও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।


ঝালদা পুরসভা চেয়ারম্য়ান শীলা চট্টোপাধ্য়ায় বললেন, টাকা আমরা পাইনি। সেই জন্য় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। ২কোটি ৮০ লক্ষ টাকা আমাদের অ্য়াকউন্টে ছিল। সেটা টাকা আমি বসার পরে আমি কোনও টাকা পাইনি। ওটা সরকারের ঘরে চলে গিয়েছে। যেহেতু একটা টানাপোড়েন চলছিল তাই রাজ্য় সরকার ওই টাকা ফেরত নিয়ে নিয়েছিল। অনেক চিঠি দিয়েছি কিন্তু টাকা আমরা ফেরত পাইনি। বরাদ্দ ফিরিয়ে নিয়ে না দেওয়ার অভিযোগ। ঝালদা পুরসভার অভিযোগ ঘিরে তুঙ্গে তরজা। পুরুলিয়া তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সেন বলেছেন, বলছে যে ফান্ড রিফান্ড গেছে। এরা দেখাতে পারবে যে ফান্ড রিফান্ড গেছে। আগের চেয়ারম্য়ান যা ফান্ড ছিল শেষ করে গেছে। এবার নতুন করে টাকা আনার এদের ক্ষমতা নেই। টাকা আনার একটা প্রক্রিয়া আছে। সার্টিফিকেট দিতে হবে কত ঘর করেছে হিসেব দিতে হবে। রাজ্য় সরকার কেন বন্ধ করবে। 


আরও পড়ুন, সংঘাতের আবহেই বাকি ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ রাজ্যপালের


পুরুলিয়ার বিজেপি নেতা সুজয় বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, জনতা সুবিধা পাচ্ছে না তার কারণ হচ্ছে এটা। জনতা যে উদ্দেশে এদের ভোট দিয়েছিল ভোটে এরা চেয়ার দখল করেছিল। চেয়ার দখলে পালাবদলের খেলার মতো খেলা চলছে। জনতা দেখছে জনতা হারে হারে চের পাচ্ছে যে কাদের আমরা ভোট দিয়েছিলাম। এক চরিত্রে ভোট নিয়েছে, অপর চরিত্রে পরিবর্তন হচ্ছে। পরিণাম ঝালদা পাচ্ছে। রাজনীতির টানাপোড়েনে ঘর না পাওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন গরিব মানুষ। ঝালদা পুরসভা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলেছেন, ত্রিপলে ঢাকা ঘরে ছিলাম আমরা। এখন আমাদের সকুলে থাকতে হচ্ছে। মিউনিসিপালিটি থেকে ভাঙতে বলেছিল। ঘর দেব ঘর দেব বলছে ঘর দেয়নি। ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। কোথায় টাকা দিচ্ছে। টাকা দিলে ঘর তৈরি হত। ঘর চাইছি। রাজ্য় সরকার ও পুরসভার টানাপোড়েন শেষে দ্রুত ঘর তৈরির দিকে তাকিয়ে সাধারণ মানুষ।