আবির দত্ত, কলকাতা: চিরাচরিত রীতি মেনে সপ্তমীর সকালে পুজো হল শোভাবাজার রাজবাড়িতে ৷ এদিন সকালে ব্যান্ডপার্টি নিয়ে শোভাযাত্রা করে গঙ্গার ঘাটে স্নান করানো হয় কলাবউকে৷ তারপর সব রীতিনীতি মেনে সপ্তমীর পুজো এবং পুষ্পাঞ্জলির পালা৷                                                        


প্রায় দুই শতাব্দী প্রাচীন এই পুজো উপলক্ষ্যে শোভাবাজার রাজবাড়িতে জড়ো হয়েছেন আত্মীয়-পরিজনেরা ৷ দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিবারের সদস্যরা সব কাজ ফেলে মেতে উঠেছেন শারদোত্সবের আনন্দে৷ পুজোর পাশাপাশি, শোভাবাজার রাজ পরিবারে চলছে ভোগরান্নার প্রস্তুতি৷ রীতি অনুযায়ী এই বাড়িতে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিঠাই ভোগ দেওয়া হয়৷ তাই বাড়িতে ভিয়েন বসিয়ে চলছে নানারকমের মিষ্টি তৈরি৷                              


আজ সপ্তমী ৷ আনুষ্ঠানিকভাবে এদিনই পুজো শুরু। লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিককে নিয়ে মা দুর্গার পিতৃগৃহে প্রবেশ। ভোরে গঙ্গার ঘাটে নবপত্রিকা স্নানের পর দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা। তারপর শাস্ত্রমতে ষোড়শ উপচারে শুরু সপ্তমীর পুজো। নবপত্রিকা শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ন’টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকা ন’টি পাতা নয়, ন’টি উদ্ভিদ। কৃষিপ্রধান বাংলার প্রতীক। এগুলি হল, কলা, কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধান। কলাবাউকে সিঁদুর দিয়ে সপরিবার দেবী প্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়।সপ্তমীতে এভাবেই প্রকৃতি আরাধনার মধ্যে দিয়ে শুরু মাতৃ বন্দনা।                                                                         


আরও পড়ুন, আজ সপ্তমী, গঙ্গার ঘাটে নবপত্রিকা স্নানের পর দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা


সপ্তমীর ভোরে ঘাটে ঘাটে ভিড় ৷ ঊষালগ্নে নবপত্রিকা স্নান৷ দেবীকে ন’টি বৃক্ষরূপে কল্পনা ৷ নবপত্রিকার মধ্যে দিয়েই প্রকৃতির সঙ্গে দেবীর এক চিরন্তন সম্পর্ক স্থাপন হয় ৷ নব পত্রিকা স্নানের পরে একে একে চক্ষুদান, প্রাণপ্রতিষ্ঠা ৷ কলকাতার জাজেস ঘাটে সকাল থেকেই ভিড়। কলাবউকে স্নান করিয়ে মণ্ডপে বা বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পালা। মহা সপ্তমীর সকালে কাটোয়ার ভাগীরথী ঘাটেও চলছে নবপত্রিকা স্নান। কলাবউকে স্নান করিয়ে নতুন বস্ত্র পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মণ্ডপে।