কলকাতা: পৃথক মামলায় রাজ্যের শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী জেলে। তবে একই দলের হলেও, প্রত্যেকে সমানভাবে দলকে পাশে পাননি। আবার অনেকে প্রথমে পেয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোটের পর সেই সাপোর্টের সমীকরণ বদলেছে। তবে যেই গ্রেফতার হয়েছেন, কিংবা অভিযুক্ত হচ্ছেন, দলের মনোভাব বোঝা না অবধি, কেউই সহজে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন না। সদ্য রেশন বণ্টনে ( Ration Scam ) দুর্নীতির অভিযোগে, ED-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick )। সম্প্রতি এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কুণাল ঘোষ বলেছেন,' এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।প্রতিশোধ নিতেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।' এবার প্রতিক্রিয়া দিলেন দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বললেন, 'জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতার হওয়া তাঁর কাছে দুঃখজনক', কিন্তু..।
এদিন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতার হওয়া তাঁর কাছে দুঃখজনক। কিন্তু এর পাশাপাশিই তিনি স্পষ্ট করে দেন,' দোষ প্রমাণিত হলে দলও পাশে থাকবে না। পার্থ-বালু নয়, অভাববোধকে জয় করাটাই আসল সুখের চাবিকাঠি। আরও একটু ভাল থাকব, সেই ইচ্ছেপূরণ সৎ পথে না করতে পারলে সেটা অন্যায়। বই লিখি, কমিশন পাই, ভয় পাই না',মন্তব্য শোভনদেবের। যদিও ইতিমধ্যেই জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারির পর একের পর এক তোপ দাগছেন শুভেন্দুরা। এমনকি বিরোধী দলনেতার মুখে উঠে আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম।
শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, 'বাকিবুর রহমানের আবিষ্কার হওয়ার পরে ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে, যে এটাতে বাকিবুর রহমান একটা ইন্সট্রুমেন্ট ছিলেন। কিন্তু বাকিবুর রহমানের প্রটেকটর, মেন্টর, গাইডার ছিলেন ১১ থেকে ২১ এর খাদ্যমন্ত্রী (২০১১-২০২১), উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের অত্যন্ত আত্মার আত্মীয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি দীর্ঘ জেরার পর গ্রেফতার হওয়ার মধ্য় দিয়ে, এই দুর্নীতির কিংপিন তিনি আপাতত ইডির কাস্টডিতে গেছেন। কিন্তু আমরা মনে করি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সামনে ছিলেন। তাঁর তোলা অর্থের বড় অংশ, মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসকদলের কাছে গিয়েছে।এবং মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া, এই হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি, কখনই একজন জেলা স্তরের নেতার করা সম্ভব ছিল না।' যদিও এরপরে চুপ বসে নেই শাসকদলও।
আরও পড়ুন, 'জনগণের করের টাকায় টাটাদের ক্ষতিপূরণ দিলে..', TMC-কে হুঁশিয়ারী দিয়ে শুভেন্দু বললেন..
সম্প্রতি এর পাল্টা উত্তরে কুণাল ঘোষ বলেন, 'শুভেন্দুর ভিডিও কে ছেড়েছিল, হাত পেতে ঘুষ নিচ্ছে, একটা রেজিস্টার চোর, চিটিংবাজ। শুভেন্দু অধিকারী। কে চোর বলেছিল ? বিজেপি চোর বলেছিল। সিবিআই কে চেয়েছিল ? বিজেপি চেয়েছিল। সিবিআই কার নামে এফআইআর করেছিল ? শুভেন্দুর নামে এফআইআর করেছিল। তারপর শুভেন্দু বিজেপিতে চলে গেল। বড় বড় কথা বলছে ! সিবিআই-ইডি দেখতে পাচ্ছে না ? এফআইআর হয়ে পড়ে থাকে, বিজেপিতে গেলে রেহাই পেয়ে যায় ! পাশাপাশি, এএনআই সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুণাল ঘোষ বলেছেন,' এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বিজেপি জানে সাধারণ মানুষ তাঁদের সঙ্গে নেই। তাই প্রতিশোধ নিতেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছে।'