কবকাতা: দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা ধরে জেরা চলাকালীনই আঁচ মিলছিল। শেষ পর্যন্ত গ্রেফতারই হলেন 'কালীঘাটের কাকু' সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Case) মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এমফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তদন্তে অসহযোগিতা করার কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ইডি-সূত্রে খবর মিলছে। এ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক তথ্য়-প্রমাণ হাতে এসেছে বলে সূত্রের খবর (Sujay Krishna Bhadra)। 


এবিপি আনন্দে প্রথম বার গোপাল দলপতির মুখে 'কালীঘাটের কাকু'র উল্লেখ শোনা যায়। বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ বার বার তাঁর নাম করেই টাকা চাইতেন বলে জানান। এর পর তাপস মণ্ডলের মুখেও নাম শোনা যায় 'কালীঘাটের কাকু'র নাম। ইডি সূত্রে খবর, সেই নিয়ে, মোবাইল ফোনে থাকা তথ্য দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাতে জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন তদন্তকারীদের সামনে মেজাজও হারান 'কালীঘাটের কাকু' (Kalighater Kaku)। 


ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় 'কালীঘাটের কাকু'কে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, একাধিক তথ্য গোপন করেছেন সুজয়কৃষ্ণ। তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন তিনি। যে তিনটি সংস্থার মাধ্যমে কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে, সেই সব সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণের বয়ান মেলেনি। ইচ্ছাকৃত ভাবেই তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করেন, বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। 


আরও পড়ুন: SujayKrishna Bhadra Arrested : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার গ্রেফতার 'কালীঘাটের কাকু'


এর আগে, গত ২০ মে সুজয়কৃষ্ণের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার হয়। বাদজেয়াপ্ত করা হয় তাঁর মোবাইল ফোন। বেশ কিছু ডিজিটাল নথিও উদ্ধার হয় বলে খবর। ঘুরপথে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা সুজয়কৃষ্ণের মাধ্যমেই হাতবদল হয় বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। সেই নিয়ে লাগাতার জেরার পরও সুজয়কৃষ্ণ অসহযোগিতা করায়, তদন্তকারীরা দিল্লিতে যোগাযোগ করেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মতামত নিতে। তার পরও গোয়েন্দারা বার বার তাঁকে সহযোগিতা করতে বলেন। শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, এমন হুঁশিয়ারিও দেন তদন্তকারীর। তাতেও সুজয়কৃষ্ণ রাজি না হওয়াতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। 


উল্লেখ্য, গত ২০ মে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI. আর সেই দিনই সুজয়কৃষ্ণের বাড়িতে-ফ্ল্যাটে হানা দেয় ED.  ১৫ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। তদন্তকারীদের সন্দেহ, নিয়োগ দুর্নীতিতে সুজয়কৃষ্ণের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  কোটি কোটি টাকার লেনদেনে জড়িত তিনি। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ৪০ কোটি টাকার লেনদেনের হদিশ মিলেছে বলেও খবর। যে তিন সংস্থার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হয়, তার সঙ্গে সংযোগ থাকার কথা যদিও অস্বীকার করেন সুজয়কৃষ্ণ।