প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সংযোগের কথা উঠে এসেছে ইতিমধ্যেই (SSC Case)। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সঙ্গেও 'কালীঘাটের কাকু' সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের (Sujay Krishna Bhadra) লেনদেন ছিল বলে এ বার দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। যুব তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা কুন্তল ঘোষ তদন্তকারীদের সে কথা জানিয়েছেন বলে আদালতে জানাল ED. 


মঙ্গলবার মধ্যরাতে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে ED. বুধবার সকালে তাঁকে তোলা হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। সেখানেই এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করে ED. আদালতে ED-র আইনজীবী জানান, বেআইনি ভাবে চাকরি বিক্রিতে সক্রিয় ভূমিকা ছিল সুজয়কৃষ্ণের। ফেব্রুয়ারি মাসে কুন্তলও সে কথা জানান তদন্তকারীদের।


আদালতে ED জানিয়েছে, মোট ৭০ লক্ষ টাকা কুন্তল সুজয়কৃষ্ণকে দেন। সুজয়কৃষ্ণের নির্দেশে পার্থকে ১০ লক্ষ টাকা দেন কুন্তল। কুন্তল নিজেই বিষয়টি তদন্তকারীদের জানানো হয়েছিল। কুন্তলের সেই বয়ানের প্রতিলিপি তুলে ধরেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সুজয়কৃষ্ণকে। কিন্তু তিনি আগাগোড়া জবাব এড়িয়ে যান, কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান তদন্তকারীদের। 


আরও পড়ুন: Sujay Krishna Bhadra: জামিনের আবেদন খারিজ, ১৪দিনের ইডি হেফাজতে 'কালীঘাটের কাকু'


মানিকের সঙ্গে সংযোগ নিয়ে প্রশ্ন করলে, সুজয়কৃষ্ণ জানিয়েছেন ২০২১ সালের আগে পর্যন্ত মানিকের সঙ্গে সংযোগ ছিল না তাঁর। কিন্তু ED-র দাবি মানিকের মোবাইল ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের নথি উদ্ধার করে দেখা গিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে মানিক এবং সুজয়কৃষ্ণের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। নিয়মিত কথা হতো দু'জনের মধ্যে। 


বেআইনি ভাবে চাকরি বিক্রিতে সুজয়কৃষ্ণের সক্রিয় ভূমিকার সমর্থনে এ দিন বিস্ফোরক তথ্য় আদালতে জমা দেয় ED. এ দিন আদালতে রাহুল বেরা নামের এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বয়ান তুলে ধরে তারা। বলা হয়, সুজয়ের নির্দেশে মোবাইল ফোন থেকে ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড এবং বাকি নথি মুছে দেন রাহুল। তদন্তকারীদের কাছে সে কথা স্বীকার করেছেন তিনি। যদিও এখনও কিছু জানেন না বলে দাবি করে যাচ্ছেন সুজয়কৃষ্ণ।


শুধু চাকরি বিক্রিই নয়, ক্লাবের ভোটে জিততে সুজয়কৃষ্ণ সরকারি চাকরিও দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, যিনি ভোট দিয়েছিলেন, তাঁর ছেলেকে জলসম্পদ দফতরে চাকরি পাইয়ে দেন 'কালীঘাটের কাকু'। ফিলাপ করতে হয়নি ফর্ম। দিতে হয়নি লিখিত পরীক্ষাও। বাড়িতে আসে ইন্টারভিউয়ের চিঠি। এবিপি আনন্দর ক্য়ামেরার চাঞ্চল্য়কর দাবি করলেন খোদ চাকরিপ্রাপকই।