এসএসসি-র নতুন নিয়োগ সং ক্রান্ত মামলায় আদালতের বড় নির্দেশ। বিচারপতি জানিয়ে দিলেন, নতুন যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাতে নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যরা অংশ নিতে পারবেন না। তাঁদের ছাড়াই সংগঠিত করতে হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নিয়েই করতে হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া, এসএসসি ও রাজ্যকে  নির্দেশ দিল আদালত। সেই সঙ্গে বিচারপতি জানিয়ে দিলেন, নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্য কেউ ইতিমধ্যে আবেদন করে থাকলে,তাহলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। 

এদিন আদালতে নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যদের পাশেই দাঁড়ায় রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন।  চিহ্নিত অযোগ্যদের পাশে দাঁড়িয়েই সওয়াল করেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলেনি যে নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না ! 

আদালতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যরা বয়সজনিত ছাড় পাবেন না। কিন্তু তাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ  করতে পারবে না এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি সুপ্রিম কোর্টের তরফে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সওয়াল শুনে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য বলেন, 'এতবড় দুর্নীতির অভিযোগ, টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট, তারপরও এটা বলবেন ?' তখন স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী  বলেন, 'তদন্ত শেষ হয়নি, কিছু প্রমাণ হয়েছে ? কারও দোষ প্রমাণ হয়েছে? কোন আইনে এদের আটকানো হবে ?' কল্যাণ আরও বলেন,নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায়  যদি নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যরা অংশ না নিতে পারেন, তাহলে তো ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া অসফল চাকরিপ্রার্থীরাও অংশ নিতে পারবেন না'। আদালতে এসএসসি-র দাবি, সুপ্রিম কোর্ট নির্দিষ্টভাবে অযোগ্য বলে চিহ্নিত না হওয়া ব্যক্তিদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি করার সুযোগ দিয়েছে। তার মানে এই নয় যে, সর্বোচ্চ আদালত নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্যদের গোটা প্রক্রিয়া থেকে বার করে দিয়েছে। 

২০২৪-সালের ২২ এপ্রিল  নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে।  যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন এবং যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ১২ শতাংশ সুদ-সহ বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে,  ২০২৪-এর ২৪ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার, SSC এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় চাকরিহারাদের একাংশও।   কিন্তু শেষ পর্য়ন্ত অযোগ্য়দের দুর্নীতির মাশুল গুনতে হয় যোগ্য়দেরও। গত ৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের রায় বহাল রেখে পুরো প্যানেলই বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ।