কলকাতা: দশমীর দিন মহিষাসুরমর্দিনী রূপে তাঁরা চালিয়েছিলেন প্রতিবাদ। আর এবারেও তাঁদেরকে আরও একধাপ এগিয়ে অন্য রূপে প্রতিবাদ করতে দেখা গেল। চাকরিতে লক্ষ্মী লাভ না হলেও, আজ কোজাগরী পূর্ণিমায় ধনদেবীর আরাধনায় SSC-র গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা।


প্রসঙ্গত, এবারের পুজোও কেটেছে রাজপথে। ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির সামনে ধর্নামঞ্চে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীরা। দশমীর দিন মহিষাসুরমর্দিনী রূপে তাঁরা চালিয়েছিলেন অভিনব প্রতিবাদ। কেউ সেজেছিলেন দুর্গা, কেউ লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক। অসুরবেশী দুর্নীতিকে বধ করে আইনি পথে চাকরি সুনিশ্চিত করাই এই প্রতিবাদের উদ্দেশ্য, দাবি গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের (Job Seekers Agitation)।


আর এবার ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির সামনে বসে লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়ে, কবিগানের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুজো করলেন তাঁরা। ৪৩১ দিনে পড়ল গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না-আন্দোলন। অন্যদিকে উচ্চপ্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের ৫০০ দিন। সেখানেও হল লক্ষ্মীপুজো। পড়া হল ৫০০ দিনের পাঁচালি।


অভিনব প্রতিবাদ এই প্রথমবার নয়, এর আগেও প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে চাকরি প্রার্থীদের। কখন মুখ্যমন্ত্রীর সাজে, আবার কখনও বেকারত্ব বোঝাতে ঝালমুড়িওয়ালা, ঘুঘনিওয়ালার সাজেও প্রতিবাদ জানাতে দেখা গিয়েছে চাকরি প্রার্থীদের। তবে এবার উৎসবমুখ শহরে এবার উমা মায়ের বেশেই দেখা গিয়েছে চাকরি প্রার্থীদের। দুর্গা মায়ের সাজেই নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে অসুর নিধনের ইস্যুও টানা হয়েছে।


পুজো আসে ,পুজো যায়, চাকরির দাবিতে অনড় চাকরিপ্রার্থীরা এবারও রাস্তায়। গতবছর সন্তানকে পুজোয় জামাকাপড়টুকু কিনে দিতে পারেননি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন আন্দোলনকারী এক মহিলা চাকরিপ্রার্থী। এখন পথেই দিন কাটাচ্ছে আন্দোলনকারীরা। নিয়োগের দাবিতে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ জারি রয়েছে। আর এবারেও পুজো কাটবে সেই রাস্তাতেই। নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি। অন্যদিকে সম্প্রতি আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে দেখা গিয়েছে বামনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায়কেও।


আরও পড়ুন, 'প্রতিশোধ নিতেই জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার', শুভেন্দুকে নিশানায় রেখে কুণাল বলেন..


অগাস্ট মাসে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ ঘিরে সল্টলেকে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। SLST চাকরিপ্রার্থীদের পর সেসময় পথে নামেন ২০১৬-র উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। দ্রুত নিয়োগের  দাবিতে সল্টলেকে আচার্য সদনের সামনে সেদিন সকাল থেকে শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ। গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন চাকরিপ্রার্থীরা। তবে নিরাপত্তা রক্ষীরা আটকে দেন। সেখানেই জামা খুলে গেঞ্জি পরে প্রতিবাদে বসে পড়েছিলেন তাঁরা। এরপর পুজোর মাসে, ঝালমুড়ির থালা হাতে দেখতে পাওয়া যায় টেট উত্তীর্ণদের।