কলকাতা: আসল OMR শিট তো দূর, সংরক্ষণ করা হয়নি প্রতিলিপিও। ফলে আলাদা করা যায়নি ‘চাল ও কাঁকর’। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গোড়া থেকেই সেই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। রবিবার নবম ও দশমের পরীক্ষায় তার রেশ দেখা গেল। এদিন চাকরিপ্রার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হল OMR শিটের প্রতিলিপি। ফলে সংশয় থাকলেও, স্বচ্ছতা নিয়ে কিছুটা হলেও আশায় বুক বাঁধছেন চাকরিপ্রার্থীরা। (SSC Recruitment Exam 2025)

Continues below advertisement

দীর্ঘ টালমাটালের পর রবিবার নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হল। পরীক্ষায় বসলেন ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে ভিন্ রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসে পরীক্ষা দিলেন ৩১ হাজার। পরীক্ষা দিয়ে তাঁরা যখন বেরিয়ে এলেন, প্রত্যেকের হাতেই OMR শিটের প্রতিলিপি দেখা গেল। ফলে স্বচ্ছতা নিয়ে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা। হাতে OMR শিটের প্রতিলিপি নিয়ে বেরিয়ে আসা এক তরুণ বলেন, “হতেও পারে। সরকারের উপর পূর্ণ আস্থা নেই। পুরোপুরি ভরসা করতে পারছি না। সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা চালিত বলে কিছুটা আশ্বস্ত।” (SSC Exam 2025)

OMR শিটের প্রতিলিপি হাতে থাকায়, পরবর্তীতে দুর্নীতির ঘটনা এলে, নিজের মামলা নিজেই করতে পারবেন পরীক্ষার্থী। এক পরীক্ষার্থী বলেন, “আশা করি আর দুরীনিতি হবে না। স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।” অন্য এক পরীক্ষার্থী বলেন, “এটা ভাল পদক্ষেপ। দেখা যাক কী হয়। তবে কিছুই বলা যায় না।” এবার থেকেই OMR শিটের প্রতিলিপি দেওয়ার রীতি চালু করেছে SSC. ১০ পর্যন্ত স্ক্যান করা কপি জমা থাকবে। হার্ড কপি সংরক্ষিত থাকবে দু’বছর পর্যন্ত। তাই স্বচ্ছতা বজায় থাকবে বলে আশাবাদী অনেকেই।

Continues below advertisement

তবে নিজেদের আশ্বস্ত করলেও, রাজ্য সরকারের উপর ভরসা নেই বলে ক্ষোভ উগরে দিলেন অনেকেই। পরীক্ষা দিয়ে বেরনোর সময় এক তরুণী বলেন, “রাজ্য সরকার দুর্নীতি করে বেড়াচ্ছে। আমরা তার শাস্তি পাচ্ছি।” SSC-র উপর ভরসা রয়েছে কি না জানতে চাইলে বলেন, “একদমই নেই।”

এদিন SSC-র তরফে জানানো হয়, নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে এবং শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে। এ নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘আজ ৩.৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসেছিলেন। সমস্ত পরীক্ষার্থী, স্কুল সার্ভিস কমিশন, শিক্ষা দফতর এবং আধিকারিকদের অভিনন্দন। একাদশ-দ্বাদশের পরীক্ষাও যাতে কড়া নিরাপত্তায়, স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়, তার সবরকম ব্যবস্থা করতে প্রস্তুত প্রশাসন’।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বার বার করে OMR শিটের উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে। চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানায়, পুরো বাছাই প্রক্রিয়াটিই কলঙ্কিত এবং সমাধানের বাইরে। বৃহত্তর পরিসরে জালিয়াতি হয়েছে, তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করার ফলে বাছাই প্রক্রিয়াটি অপূরণীয়ভাবে কলুষিত হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের তীব্র সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশনামায় জানায়,  আসল OMR বা অন্তত OMR-এর প্রতিলিপি সংরক্ষণে স্কুল সার্ভিস কমিশন ব্য়র্থ হয়েছে। সেই  অবস্থায় নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেয় SSC. সেইমতো রবিবার ছিল শিক্ষক নিয়োগে নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা।