কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে বৈধ নিয়োগের সংখ্যা জানাল স্কুল সার্ভিস কমিশন। মঙ্গলবার শুনানি চলাকালীন, SSC জানায়, যোগ্য চাকরিপ্রাপকের সংখ্যা ১৯ হাজার। মেধাতালিকা অনুযায়ী তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল বলে জানাল SSC. পাশাপাশি অবৈধ ভাবে ৭ হাজার জনকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে সর্বোচ্চ আদালতে জানাল তারা। প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল নিয়ে শুনানি চালাকালীন এই তথ্য দিল SSC. (SSC Scam Case)
এর আগে কলকাতা হাইকোর্টে তিন-তিন বার হলফনামা জমা দিয়ে SSC জানায়, ৫ হাজার ২৫০ জনকে অযোগ্য বলে জানায় SSC. আজ সুপ্রিম কোর্টে জানাল, অযোগ্য চাকরি প্রাপকের সংখ্যা ৭ হাজার। যোগ্যদের চেয়ে অযোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে বেশি তৎপরতা চোখে পড়ছে বলে এযাবৎ বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতে এদিন আদালতে যোগ্য চাকরি প্রাপকদের হয়ে সওয়াল করল SSC অযোগ্যদের হয়ে আদালতে কোনও সওয়াল করছে না তারা।
OMR শিটের প্রসঙ্গও এদিন উঠে আসে আদালতে। OMR শিট কবে নষ্ট করা হয়েছিল, নাইসাকে টেন্ডারের মাধ্যমে বরাত দেওয়া হয়নি বলে যে অভিযোগ, সেই নিয়ে SSC-কে প্রশ্ন করে আদালত। জবাবে SSC সীমিত টেন্ডারের মাধ্যমে বরাতের কথা জানায়। কিন্তু তার স্ক্যান্ড কপি কেন নেই SSC-র সার্ভারে, টেন্ডারে কয়টি সংস্থা অংশ নিয়েছিল, জানতে চায় আদালত। SSC জানায়, চারটি সংস্থা টেন্ডারে অংশ নেয়। কাজ সম্পূর্ণ না করতে পারলে করতেই হবে না বলে কেন নাইসা-কে আগেই জানানো হল না প্রশ্ন তোলে আদালত।
SSC-র উদ্দেশে এদিন আদালত বলে, সরকারি নিয়োগে যদি মানুষের ভরসা উঠে যায়, তাহলে কী রইল? অনেক দরিদ্র মানুষও সরকারি চাকরির আশায় থাকেন। সরকারি চাকরি অত্যন্ত মূল্যবান। তথ্য না থাকলে সমস্ত নিয়োগ বাতিল হওয়া উচিত। বহিরাগত এজেন্সির কাছে কেন সব তথ্য থাকবে, প্রশ্ন তোলে আদালত। জবাবে SSC বলে, "এটা তো মানুষের তথ্য! নাইসার তথ্যের ভিত্তিতেই তদন্ত করেছে CBI." কলকাতা হাইকোর্ট বেতন ফেরত নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছে, তা যুক্তিযুক্ত নয়, সেখানে বিভাজন ঘটানো হয়েছে বলে জানায় তারা।
আরও পড়ুন: SSC Recruitment Scam: 'কারা যোগ্য-কারা অযোগ্য, বলতে পারবে এসএসসি' কমিশনের কোর্টে বল ঠেলল রাজ্য
অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি নিয়ে এর আগে হাইকোর্টের তরফে CBI তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। রাজ্যের মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও প্রয়োজনে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে বলে জানানো হয়েছিল। এদিন হাইকোর্টের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে সওয়াল-জবাব করে রাজ্য। শুনানি চলাকালীন রাজ্য জানায়, এই অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু নিয়োগ করা হয়নি কাউকে। হাইকোর্টের নির্দেশেই শূন্যপদে নিয়োগ হয়নি। তাহলে কেন তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল, প্রশ্ন তোলে রাজ্য। (SSC Recruitment Case)
এদিন আদালতে রাজ্য জানায়, আদালতের নির্দেশে শূন্য় পদে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। আদালতের নির্দেশের অপেক্ষাই করেছে। তার পরও কেন CBI তদন্তের নির্দেশ, প্রশ্ন তোলে রাজ্য। এর পাল্টা আদালত বলে, "সুপ্রিম কোর্ট CBI-কে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। হাইকোর্টের সিবিআই-নির্দেশ কি তারই অনুসারী বলে মনে হয় না?" তাতে রাজ্য জানায়, সুপ্রিম কোর্ট র্যাঙ্ক জাম্প, ওএমআর দুর্নীতির তদন্ত করতে বলেছিল। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চে অতিরিক্ত শূন্য পদ নিয়ে সওয়াল-জবাব হয়নি। রাজ্য প্রশ্ন তোলে, এই নির্দেশের ফলে কি মন্ত্রিসভা, আইন বিভাগ, অর্থ দফতরকে জিজ্ঞাসাবাদ, সবাইকে হেফাজতে নেবে সিবিআই, যে পদ্ধতিতে সিবিআই-নির্দেশ, তা কি বহাল থাকতে পারে? রাজ্য মন্ত্রিসভার হয়ে এমনই সওয়াল করে রাজ্য।