সুদীপ চক্রবর্তী, ভাস্কর মুখোপাধ্য়ায় ও সমীরণ পাল, কলকাতা : SSC-র প্রকাশ করা চাকরিহারা 'দাগি'দের তালিকায় তৃণমূল-যোগের উদাহরণ ভুরি ভুরি। বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে,'দাগি'র তালিকা বাছতে তৃণমূল উজাড়! কিন্তু, 'দাগি' কি শুধু তৃণমূলেই? SSC-র প্রকাশিত তালিকায় খোঁজ মিলেছে বিজেপি-সিপিএম নেতাদের আত্মীয়দেরও!
'দাগি'দের তালিকায় ১১২ নম্বরে রয়েছে একটি নাম। অনুপকুমার মৃধা। যিনি উত্তর দিনাজপুরের বিজেপির জেলা সম্পাদক অসীমকুমার মৃধার ভাই। ইসলামপুরের ধনতলা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে চাকুলিয়ার বিজেপি প্রার্থী ছিলেন অসীমকুমার মৃধা। যদিও অসীমকুমার বলছেন, 'বিচারাধীন বিষয়। এ বিষয়ে কিছু বলার নেই। আমার বিশ্বাস সুপ্রিম কোর্ট যোগ্য় বিচার করে দোষীদের শাস্তি দেবে।'
দাগিদের তালিকায় ৬৫৩ নম্বরে নাম রয়েছে,বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার কোষাধ্যক্ষ সুরজিৎ সরকারের স্ত্রী লক্ষ্মী বিশ্বাসের। তিনি রামপুরহাটের কুসুম্বা হাই সকুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা ছিলেন। লক্ষ্মী বিশ্বাসের স্বামী ও বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার কোষাধ্যক্ষ সুরজিৎ সরকারের দাবি, 'আমরা রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার, তৃণমূল সরকার পরিচালিত এসএসসি ইচ্ছে করে এটা করেছে।'
কলঙ্কের ছিটে কি তাহলে বিজেপির গায়েও লাগল? রাজ্য় সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, 'বিজেপি নেতারা তো আর চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না! বিজেপি নেতারা তো আর তালিকা তৈরি করে দিতে পারে না! বিজেপির কোনও নেতার কোনও আত্মীয় যদি চাকরি পেয়ে থাকে, তাঁদের সরান সেখান থেকে। সেই নেতাকেও চিহ্নিত করুন। মনে রাখবেন, সেই নেতা চাকরিটা দেননি। যারা টাকা দিয়ে চাকরি কিনেছিল, তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত।'
দাগি নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিজেপিকেও খোঁচা দিচ্ছে সিপিএম। রাজ্য়সভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, ' তৃণমূল-বিজেপি একসঙ্গে চা খেতে খেতে দুর্নীতিটা করেছে। এদের মধ্য়ে কোনও পার্থক্য় নেই।' কিন্তু দাগিদের তালিকায় ১১৮৬ নম্বরে নাম রয়েছে, সিপিএম নেতা, বনগাঁ এরিয়া কমিটির প্রাক্তন সদস্য় রীতেশ ঘোষের। সেই 'দাগি' শিক্ষক বলছেন, 'সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারকে ভুল ব্য়াখ্য়া করে, ইচ্ছাকৃতভাবে SSC যে কাজটা করেছে, এর বিরুদ্ধে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব এবং যতদূর যেতে হয়, আমরা যাব।'এখন সিপিএম বা বিজেপি এই ঘটনার কী ব্যাখ্যা দেন, সেটাই দেখার।