সন্দীপ সরকার, কলকাতা: উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে একদিনে আক্রান্ত ২৯২ জন। ২৫১ জন রোগী এই মুহূর্তে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি। সবথেকে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে উত্তর ২৪ পরগনায়। আক্রান্তের সংখ্যা ৬০। আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এরপর রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ি, হুগলি, হাওড়া ও মুর্শিদাবাদ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি চিকিৎসার আদর্শ চিকিৎসা বিধি সম্পর্কে সরকারি চিকিৎসকদের ওয়াকিবহাল করা হয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে প্লেটলেট মজুত রাখার বিষয়টিও নিশ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে।
পুজোর মুখে রাজ্যে ডেঙ্গির চোখরাঙানি। শেষ দু’ সপ্তাহে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৪০ জন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪২৪ জন। গত ৭ দিনে শুধু সরকারি হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৬০০ রোগী। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, ডেঙ্গির সংক্রমণ সবথেকে বেশি হাওড়া, জলপাইগুড়ি ও উত্তর ২৪ পরগনা, এই ৩ জেলায়। সূত্রের খবর, প্রতি বৃহস্পতিবার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে যে সাপ্তাহিক পর্যালোচনা হয়, তাতেই উঠে এসেছে এই তথ্য।
ডেঙ্গি সচেতনতায় ঢাক বাজালেন সৌগত রায়। এদিন দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে পদযাত্রা করেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ। ছোটদের মা দুর্গার সাজে সাজানো হয়। ডেঙ্গি সচেতনতায় সাংসদের সঙ্গী হন পুরসভার কর্মীরাও। বাড়ি বাড়ি ঘুরে চলে প্রচার।
রাজ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি। শুধু কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা নয়, আশপাশের জেলাগুলিতেও থাবা বসিয়েছে মশাবাহিত এই রোগ। এই সময় শিশুদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখার পরামর্শ দিচ্ছে।
করোনা পুরোপুরি বিদায় নেয়নি এখনও, তার মধ্যেই চিন্তা বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি! স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতার পাশাপাশি, হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। কলকাতায় যেখানে চলতি বছরের ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৯৬, সেখানে উত্তর ২৪ পরগনায় সেই সংখ্যা ৪৬৭, এবং হাওড়ায় ৪৬১।
এই তিন জেলার পাশাপাশি, দার্জিলিং, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, মালদা ও দুই মেদিনীপুরেও বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। এই আবহে শিশুদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকরা।
সর্দি-কাশি ছাড়া জ্বর হলে তা ডেঙ্গি হতে পারে। জ্বর সারলে ডেঙ্গি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। মাথা ঘোরা, ঘাম বেশি হওয়া বা চোখে অন্ধকার দেখার মত উপসর্গ থাকলে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকরা।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষ বলছেন, কোভিডের সময় আমরা অক্সিজেনের দিকে নজর দিচ্ছিলাম, ডেঙ্গির সময় যদি দেখেন পালসটা বেড়ে যাচ্ছে, তাহলে কিন্তু ধরে নিতে হবে ডেঙ্গি সিরিয়াস হচ্ছে ১২০-৩০-এর বেশি হলে হাসপাতালে ভরতি করুন তখন।
স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে দেখা গেছে, ১৪টি স্বাস্থ্য জেলায় টেস্টের সংখ্যা একেবারে তলানিতে। সেই জেলাগুলি হল ঝাড়গ্রাম, নন্দীগ্রাম, উত্তর দিনাজপুর, কালিম্পং, দক্ষিণ দিনাজপুর, বাঁকুড়া ও রামপুরহাট।
এই প্রেক্ষিতে ডেঙ্গি রুখতে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক সেরেছে স্বাস্থ্য দফতর। যে সব জেলার পরীক্ষার সংখ্যা কম, সেখানে পরীক্ষা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।