কলকাতা: দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election)। পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বাজতেই জেলায় জেলায় অশান্তি। মনোনয়নের শুরু থেকেই গ্রাম দখলের লড়াইয়ে ফুটছে বঙ্গ (West Bengal)। এই পরিস্থিতিতে কি, রাজ্য পুলিশ (West Bengal Police) দিয়ে সুষ্ঠু ও অবাধ পঞ্চায়েত ভোট সম্ভব? সেই পরিস্থিতিতে মনোনয়নে অশান্তি রুখতে ১৪৪ ধারা জারি করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। 


কী নিয়ম লাগু? 


শুক্রবার থেকে মনোনয়ন পর্ব শুরু হতেই জেলায় জেলায় সংঘর্ষ, অশান্তির ছবি ধরা পড়ে। গন্ডগোল আটকাতে আজ থেকে মনোনয়ন কেন্দ্রের ১ কিলোমিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ৪ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। মনোনয়ন কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন প্রার্থী-সহ ২ জন। কমিশন আগেই নির্দেশ দেয়, কোনও প্রার্থী মিছিল করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন না। করা যাবে না বাইক র‍্যালি। মনোনয়ন জমা দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি 
করতে হবে। কীভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে হবে, তা নিয়ে আজ শিশির মঞ্চে প্রায় আড়াইশো জন নির্বাচনী পর্যবেক্ষককে নিয়ে বৈঠক করবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা।


এদিকে, পঞ্চায়েতে মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকেই অশান্তির অভিযোগ ঘিরে এবার স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের পথে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছেন NHRC-র ডিজি। অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে এমন স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করা হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে NHRC। জানাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।


অন্যদিকে, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে পুলিশের রুট মার্চ। গ্রামবাংলার রাস্তাঘাটে টহল দেওয়া থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললেন পুলিশ কর্মীরা। উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে গ্রামবাংলার পথে পথে টহল দিতে দেখা গেল পুলিশ বাহিনীকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মনে আস্থা ফেরানোর লক্ষ্যে কথাও বললেন পুলিশ কর্মীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামগুলিতেও দেখা গেল একই ছবি। কাকদ্বীপের সিআই এবং হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার ওসির নেতৃত্বে চলল পুলিশি টহল। কোনও রাজনৈতিক দল ভয় দেখালে, নিজের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে সেখানে খবর দেওয়ার কথা বলেন ওসি। মনোনয়ন পর্ব শুরুর পর থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে বাঁকুড়ায়। শনিবারও বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন তোলায় বাধা দিতে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।


মেজিয়ার লালবাজার মোহনা, ভুলুই, যুগিবাগ, কালিকাপুর-সহ একাধিক গ্রামে রুটমার্চ করতে দেখা যায় বাঁকুড়া জেলা পুলিশের বাহিনীকে। একইভাবে রুটমার্চ চলে বাঁকুড়ার ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। শাসক-বিরোধী অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে তেতে উঠছে লালমাটির জেলা। এলাকায় চাপা উত্তেজনা রুখতে এবার সিউড়ির বিভিন্ন এলাকায় টহল দিতে দেখা গেল সিউড়ি থানার পুলিশ ও র‍্যাফকে।


 


আরও পড়ুন, নিজের হাতে ৮ হাজার গাছকে সন্তানস্নেহে পালন, ১১২ বছরেও কীর্তি গড়ে চলেছেন ভারতের 'বৃক্ষ-মাতা'