সুনীত হালদার, হাওড়া: টাকার বিনিময়ে স্কুলে চাকরি বিক্রি থেকে আবাস যোজনার বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। তার মধ্যেই এবার সবুজ সাথী (Sabuj Sathi) প্রকল্পে সাইকেলের (Cycle) জন্য পড়ুয়াদের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল! বৃহস্পতিবার এনিয়ে হাওড়ার ডোমজুড়ে (Domjur) কলোড়া হাইস্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। স্কুলে ঢুকতেই দেখা গেল, রীতিমতো তালিকা তৈরি করে টাকা তুলছেন কয়েকজন যুবক। ক্যামেরা দেখেই অবশ্য সরে পড়েন তাঁরা।


কী ঘটেছিল?
অভিভাবকদের অভিযোগ, সবুজশ্রী প্রকল্পে সাইকেল পেতে গেলে পড়ুয়াদের থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। যদিও নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি প্রকল্পে পড়ুয়াদের বিনামূল্যেই সাইকেল দেওয়ার কথা। আব্দুল হক সর্দার নামে এক পড়ুয়ার অভিভাবক বলেন, 'স্কুল চত্বরে বসে পড়ুয়াদের থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। অথচ, সেনিয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ও পরিচালন কমিটির সদস্যরা।' অন্য দিকে, কলোড়া হাইস্কুলের টিচার ইন চার্জ, সোনালি মৈত্র বলেন, 'এগুলি আমি জানি না। ম্যানেজিং কমিটি এসব দেখে।' বিষয়ি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হাফিজুল নস্করকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'এসব জানি না। আমাদের টাকা নেওয়ার কথা নয়। কেউ নিলে দেখতে হবে। তদন্ত করব। তবে এটা বলব, কেউ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করছে।'


রাজনৈতিক তোলপাড়...
বিজেপি মুখপাত্র ওমপ্রকাশ সিংহ অভিযোগ নিয়ে বলেন, 'এটাই ওদের রীতি। সব জায়গায় শুধু কাটমানি।' সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়ক প্রিয়া পাল অবশ্য বলেছেন, 'এটা ঠিক নয়। টাকা নিলে অন্যায় করেছে। অবশ্যই কথা বলব।' রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, দুয়ারে সরকার-সহ একাধিক প্রকল্প পুরস্কৃত হয়েছে। ভিনরাজ্যে বাংলা মডেল তুলে ধরে ভোটের প্রচার করেছেন তৃণমূল নেত্রী। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবার সেই প্রকল্পের জন্যই স্কুল পড়ুয়াদের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেবার সবুজ সাথীর সাইকেল বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে খোদ প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর চারঘাট গার্লস স্কুলের ঘটনা। গ্রেফতার অভিযুক্ত। ভাইরাল ভিডিওর মাধ্যমে ঘটনা জানাজানি হয়। ৮টি সবুজ সাথী সাইকেল ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক ভ্যান চালক। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেন, একেকটি সাইকেলের দাম পড়েছে ৩৭০ টাকা। প্রধান শিক্ষিকা এভাবে ধাপে ধাপে ৫০টি সবুজ সাথী সাইকেল বিক্রি করবেন বলে ওই ভ্যান চালক দাবি করেন। স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগের ভিত্তিতে এরপর প্রধান শিক্ষিকা রিঙ্কু দাসকে গ্রেফতার করে স্বরূপনগর থানার পুলিশ। বিয়ে হয়ে যাওয়ায় অনেকে সবুজ সাথী সাইকেল নেয়নি, তাই সেগুলি অন্যত্র সরানো হচ্ছিল, বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি ধৃত শিক্ষিকার।


আরও পড়ুন:মমতার জন্য বাংলার ৩ কোটি মানুষের টাকা গিয়েছে, সারদা নিয়ে আক্রমণে শুভেন্দু