প্রবীর চক্রবর্তী ও সৌমিত্র রায়, কলকাতা: বর্ষার বৃষ্টি এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। তাতেই হাঁটুসমান জল হরিদেবপুরে (Haridevpur)। তার মধ্যে দিয়ে রাস্তা পেরোচ্ছিল ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া নীতীশ যাদব। টাল সামলাতে  লাইটপোস্টে(lamppost) হাত দিয়েছিল কিশোর। ব্যস! তার পরই সব শেষ। মুহূর্তে পড়ে গেল কিশোর। সব শেষ তখনই।


গত ২২ সেপ্টেম্বর কার্যত এক ঘটনা ঘটেছিল দমদমে। সে বার বান্ধবনগরের বাসিন্দা দুই কিশোরী একই ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট (electrocution) হয়ে মারা যায়। রবিবার হরিদেবপুরে যা ঘটেছে, তাতে সেই স্মৃতিই ফের টাটকা। 


কী হয়েছিল?


রবিবার ৬টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শিক্ষিকার বাড়ি যাচ্ছিল নীতীশ। তখনই রাস্তায় জমা জল পেরোতে গিয়ে কোনও কারণে লাইটপোস্টে হাত দিয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র নীতীশ। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। তড়িঘড়ি বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরকে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজে গোটা পর্বটি ধরা পড়েছিল। মর্মান্তিক সেই ছবি দেখে শিউরে উঠেছেন অনেকেই। আতঙ্কে স্থানীয়রা। তবে কি বর্ষা মানেই হাতে প্রাণ নিয়ে হাঁটাচলা? প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। 


ক্ষোভ আমজনতার...


নীতীশের মৃত্য়ুর খবর পৌঁছতেই তড়িঘড়ি এলাকায় পৌঁছে যায় পুলিশ। আর যাতে বড়সড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য গোটা এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। কিন্তু এতো গেল আপৎকালীন প্রতিক্রিয়া। সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যাওয়ার প্রাণান্তকর অভিজ্ঞতা নতুন নয় হরিদেবপুরের বাসিন্দাদের কাছে। তাঁদের প্রশ্ন, সমস্ত রকম কর দেওয়া সত্ত্বেও কেন ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবাটুকু পাওয়া যাচ্ছে না? কেন জল জমাটাই দস্তুর হয়ে দাঁড়াচ্ছে মহানগরের নানা প্রান্তে? 


গত ২২ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ দমদমের বান্ধবনগরে হুবহু প্রায় এক ঘটনা ঘটেছিল। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন ছিল এলাকা। সেখানেই এক রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় টাল সামলাতে না পেরে একটি বিদ্যুতের খুঁটি আকড়ে ধরে এক কিশোরী। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। তাকে ছাড়াতে গিয়ে আর এক কিশোরী ঝাঁপিয়ে পড়লে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। সবের নেপথ্য়েই মূল খলনায়ক জমা জল।কবে নিস্তার মিলবে এই দুর্ভোগ থেকে? উত্তর খুঁজছে শহরবাসী।  


আরও পড়ুন:বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু গলসিতে