কলকাতা: বাড়িতে বাবাকে না পেয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন তিনিই। এখন জানতে পারছেন দিল্লিতে মুকুল রায় (Mukul Roy)। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর পুলিশের মাধ্যমে বাবার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন বলে জানালেন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায় (Subhranshu Roy)। জানালেন, যা করেছেন, সজ্ঞানেই করেছেন বলে ফোনে জানিয়েছেন মুকুল। বাড়িতে কাউকেই যে বলে বেরোননি, সে কথাও মেনে নিয়েছেন মুকুল, জানালেন শুভ্রাংশু। 


দিল্লিতে এবিপি আনন্দ-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বিজেপি-তে ফেরার ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন মুকুল। সজ্ঞানেই দিল্লি এসেছেন, এবং বিজেপি-র হাত ধরে ফের সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে চান বলে জানিয়েছেন। ছেলে অসুস্থতা কথা জানালেও, এখন তিনি পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন বলেও দাবি করেন মুকুল। সেই আবহেই মুকুলের সঙ্গে কথা হওয়ার কথা জানালেন শুভ্রাংশু।


এ দিন এবিপি আনন্দে শুভ্রাংশু বলেন, "পুলিশের মাধ্যমে কথা হয়েছে বাবার সঙ্গে। আমি জানতে চাইলাম, সাংবাদিককে বলেছো, আমাকে বলে গিয়েছো তুমি? তোমার সঙ্গে কথা হয়েছে আমার'? বাবা বললেন, 'না, বাড়ির কাউকে বা তোকে বলে আসিনি'। আমি জানতে চাইলাম, 'যা করেছো সজ্ঞানে করেছো তো'! বললেন, 'হ্যাঁ'।"


আরও পড়ুন: Mukul Roy: সজ্ঞানেই দিল্লি গিয়েছেন, দাবি মুকুলের, বললেন, ‘CPM-কে হটানোই লক্ষ্য’


মুকুল যে অসুস্থ, সে কথা আগেও একাধিক বার জানিয়েছেন শুভ্রাংশু। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন মিটলে মুকুল এবং শুভ্রাংশু জোড়াফুল পতাকা হাতে তুলে নেন। তার পর পৌরসভা নির্বাচনের আগে কৃষ্ণনগরে গিয়ে বিজেপি জিতবে, তৃণমূল পর্যুদস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন। তাতে অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল। সেই সময়ই শুভ্রাংশু জানান, মুকুল অসুস্থ। মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত, কিছু মনে রাখতে পারেন না, চিনতে পারেন না চেনা লোককেও। 


 এ বারও বার বার মুকুলের অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন শুভ্রাংশু। তিনি জানান, মুকুল আর নিজের মধ্যে নেই। গত তিন-চার বছরের স্মৃতি হারিয়েছেন। এখনও নিজেকে সাংসদ ভাবছেন। ভাবছেন, সংসদে যাচ্ছেন। কথা বলছেন অমিত শাহদের সঙ্গে। শুভ্রাংশু জানিয়েছেন, এতে মুকুলের কোনও ভুল নেই। রোগের শিকার তিনি। চিকিৎসা চলছে। তবে সময় দিতে হবে। তিন দিন আগে থেকে মুকুল ইনস্যুলিন নিচ্ছেন না, ওষুধ খাচ্ছেন না বলেও জানিয়েছেন শুভ্রাংশু। সুগার পরীক্ষা করালে, তা ৩০০-র কাছাকাছি হবে বলে আশঙ্কা তাঁর। তাঁর বক্তব্য, "এমন মানুষকে নিয়ে চিন্তা করব না!"


ছেলেও  বিজেপি-তে ফিরে আসুক, তিনি জান বলে এ দিন জানান মকুল। যদিও শুভ্রাংশু জানিয়েছেন, তিনি প্রাপ্তবয়স্ক। কী করবেন, না করবেন, পুরোটাই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে তৃণমূল করেন তিনি। বাবাকে নিয়ে লাগাতার কটাক্ষও শুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শুভ্রাংশু। তাঁর আর্জি, "ভাল করে কাজ করতে চাই। আমাকে আর ঠেলে বিজেপি-র দিকে পাঠাবেন না।"