প্রকাশ সিংহ, কলকাতা: নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) জামিনের (Bail) আর্জি (Plea) খারিজ (reject) সুবীরেশ ভট্টাচার্যের (subiresh bhattacharya)। আপাতত তাঁকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের (Jail Custody) নির্দেশ আলিপুর আদালতের বিচারকের। 

কী ঘটল?
এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবীর তরফে সওয়াল করা হয়, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের নির্দেশেই চাকরিপ্রার্থীদের মার্কশিটে নম্বর বদল হয়েছে। গোটা বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান, আরও দাবি সিবিআইয়ের আইনজীবীর। তাঁর দাবি, পুরো দুর্নীতিতে তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কার্যত সুবীরেশের নজরদারিতেই গোটা প্রক্রিয়াটি চলেছিল, দাবি সিবিআইয়ের আইনজীবীর। সঙ্গে বলা হয়, তদন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্তরে, এ সময়ে সুবীরেশ জামিন পেলে তদন্ত প্রভাবিত হবে। অন্য দিকে, অভিযুক্তের আইনজীবী শারীরিক অসুস্থতার কারণে মক্কেলের জন্য জামিনের আবেদন করেন। দুপক্ষের সওয়াল শোনার পর আর্জি খারিজ করে তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন আলিপুর আদালতের বিচারক। আজ আলিপুর কোর্ট থেকে সোজা প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানোর কথা সুবীরেশকে। 


প্রেক্ষাপট...
গত বার শুনানিতে সুবীরেশকে একদিন জেরা করার জন্য সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ৎসনা করেন আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক। এরপরই সিবিআই হেফাজতের পরিবর্তে SSC-র প্রাক্তন চেয়ারম্যানের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। সিবিআই-র তদন্তকারী অফিসার এর আগে আদালতে জানান, ১ হাজার উত্তরপত্রে নম্বর কারচুপি হয়েছে। দাবি ছিল, এই উত্তরপত্রগুলিতে নম্বর হেরফের করা হয়েছে। সার্ভার পরীক্ষা করে নম্বর কারচুপির প্রমাণ মিলেছে, দাবি আইও-র। গোটা বিষয়টি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তদন্তকারী অফিসারের। তবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেও। সিবিআই-র আইনজীবীকে একের পর এক প্রশ্ন করেন আলিপুর কোর্টের বিচারক। জানতে চান, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, অত্যাচার করা হচ্ছে। নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না? এতেই শেষ নয়। বিচারকের প্রশ্ন ছিল, কেন সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে একদিনের জন্যও ডাকা হয়নি? জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি? জবাবে তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী জানানস ২১ তারিখ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলাম। বিচারকের পাল্টা প্রশ্ন ছিল, 'তার মানে ২২ থেকে সকাল পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ হয়নি?' এর পরই সুবীরেশকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়ার আবেদন প্রসঙ্গে কড়া প্রতিক্রিয়া দেন বিচারক। বলেন, ‘হেফাজতে কেন দেব? মেয়াদ ফুরোলে আবার তো একই কথা বলবেন!’ জিজ্ঞাসাবাদে উনি সহযোগিতা করছেন না, পাল্টা দাবি করে তদন্তকারী সংস্থা। যদিও সে যুক্তি কার্যত মানতে চাননি বিচারক। বলেন, 'আপনারা প্রশ্ন করলে তবে তো উনি সহযোগিতা করবেন'। সবশেষে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে। 


আরও পড়ুন:গরু পাচারে বাধা দিতে গেলে জওয়ানদের উপর ধারাল অস্ত্র নিয়ে চড়াও, পাল্টা গুলিতে মৃত্যু পাচারকারীর